রিপোর্টে অসন্তুষ্ট পরিবার, যুবকের রহস্যমৃত্যুর তদন্ত নিয়ে হাইকোর্টের ভর্ৎসনা সিটকে

রিপোর্টে অসন্তুষ্ট পরিবার, যুবকের রহস্যমৃত্যুর তদন্ত নিয়ে হাইকোর্টের ভর্ৎসনা সিটকে

কলকাতা: ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কৌশিক কর্মকার নামে এক যুবকের রহস্যমৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন যুবকের পরিবার। ওই মাসেই সিট গঠনের নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু তাঁদের রিপোর্ট নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে কৌশিকের পরিবার। সেই প্রেক্ষিতে এবার কলকাতা হাইকোর্ট ভর্ৎসনা করল সিটকে। আসলে সিটের জমা দেওয়া রিপোর্টের তীব্র বিরোধিতা করে কৌশিকের পরিবারের আইনজীবীরা। তবে স্পেশাল ইনভেস্টিকেশন টিমের রিপোর্টের ভিত্তিতে বেশ কিছুটা সময় দেওয়া হয়েছে। সেই সময়ের মধ্যে সিটের রিপোর্টে কোথায় গলদ রয়েছে তা চিহ্নিত করে আদালতে তা তুলে ধরার নির্দেশ। একই সঙ্গে প্রশ্ন করা হয়েছে, কৌশিকের পাকস্থলীতে মদ পাওয়া গিয়েছিল কিনা। ভিসেরা জন্য কেন পাঠানো হয়নি তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। সব শুনেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন- ভার্চুয়াল হাজিরা দিতে পারবেন পার্থ-অর্পিতা? যা জানা গেল

ঘটনা কী? ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বর্ধমান জেলার নাদনঘাট থানার অন্তর্গত হেমাতুপারে মা লক্ষ্মী অটো মোবাইল সেন্টারে কৌশিক কর্মকারের একটি গাড়ি সারাতে দেওয়া হয়েছিল। গাড়িটি সেদিন হস্তান্তর করার কথা ছিল। সন্ধ্যা নাগাদ একটি ফোন আসে কৌশিকের কাছে। সে জানায় বাড়ি ফেরার সময় গাড়িটা নিয়ে আসবে। কিন্তু বাড়ি ফেরার সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর কৌশিক বাড়ি না ফেরায় তাঁকে ফোন করেন বাবা। সে জানায়, গাড়ি সরানো এখনও হয়নি। রাত ১১ টা নাগাদ শেষ বার কৌশিক জানিয়েছিল গাড়ি সরানো হয়ে গেছে, সে বাড়ি ফিরবে। কিন্তু তার কিছুটা সময় পর কৌশিকের বাবা জানতে পারেন কৌশিকের দুর্ঘটনা ঘটেছে। ফোনেই তাঁকে কেউ খবর দেয়। নবদ্বীপ থানার পুলিশ জানায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কৌশিক হাসপাতালে মারা যায়। তাঁর দেহ পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দিতেই শরীরের আঘাতের চিহ্ন দেখে পরিবারের সন্দেহ হয়। অভিযোগ করা হয় তাঁকে খুন করা হয়েছে।

কৌশিকের মৃত্যু রহস্য কিনারা চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন কৌশিকের পরিবার। বিচারপতি সঞ্জিব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি কৌশিক চন্দ্রের ডিভিশন বেঞ্চ সিট গঠনের নির্দেশ দেন। সিটের প্রধান প্রণব কুমার আইপিএস, ইন্দ্র চক্রবর্তী এবং অতীশ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়। তবে সিটের তদন্ত রিপোর্ট আদালতে জমা পড়ার পর দেখা যায় কৌশিকে খুন করা হয়নি। সে গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। যদিও কৌশিকের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ কৌশিকের স্ত্রীর আগের পক্ষের স্বামী, অর্ণব ভট্টাচার্য মাঝে মধ্যে রাস্তায় কৌশিককে একা পেয়ে হুমকি দিতেন। তাঁদের অভিযোগ কৌশিককে খুন করা হয়েছে। এই মামলার পরের শুনানি আগামী ৭ সেপ্টেম্বর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − six =