অভিজিতের সাহসিকতার জন্যই দুর্নীতির পর্দা ফাঁস, অকুন্ঠ প্রশংসা প্রাপ্য: প্রাক্তন এজি বিমল চট্টোপাধ্যায়

অভিজিতের সাহসিকতার জন্যই দুর্নীতির পর্দা ফাঁস, অকুন্ঠ প্রশংসা প্রাপ্য: প্রাক্তন এজি বিমল চট্টোপাধ্যায়

3dbdbb00e97c4f49629361e564d109c7

কলকাতা:  স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ৷ গ্রেফতার রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে যে অগ্রগতি ঘটেছে, তার জন্য বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করলেন প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চট্টোপাধ্যায়৷ তাঁর কথায়, এসএসসি মামলায় যে অগ্রগতি তাঁর নেপথ্য নায়ক অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ তাঁর সাহসিকতার জন্যেই এত বড় দুর্নীতি চক্রের পর্দাফাঁস করা গেল৷ যে মামলায় শাসকদলের প্রথম সারির নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা জড়িত৷ 

আরও পড়ুন- হুইল চেয়ারে বসে SSKM হাসপাতালে পৌঁছলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়

শিক্ষক সহ এসএসসি’র একের পর এক দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়ে রাজ্যে রীতিমতো আলোড়ন ফেলে দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ শুধু নির্দেশ দিয়েই খান্ত থাকেননি তিনি৷ সিবিআই তদন্তের অগ্রগতি পর্যালোচনা, অভিযুক্তদের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সামনে হাজির করা, সবটাই নিশ্চিত করেছিলেন৷ সেই মামলাতেই শনিবার সকালে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)৷ গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর আপ্ত সহায়ক সুকান্ত আচার্য এবং ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে৷ এই অর্পিতার বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয়েছে নগদ ২১ কোটি টাকা৷ শুক্রবার সকাল থেকে বেনজির তল্লাশি চালিয়ে এই টাকা উদ্ধার করেন ইডি-র আধিকারিকরা৷ 

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই সাড়া জাগানো ঘটনার পর বিমল চট্টোপাধ্যায় বলেন, এর জন্য জোড় গলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশংসা করা উচিত। কারণ, অনেক বিচারপতিই হেভিওয়েট ব্যক্তিত্বদের বিরুদ্ধে এগনোর সাহস দেখান না। অনেক সময় তাঁদের এগোতে দেওয়া হয় না। কিন্তু কোনও বাধাই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পথ অবরুদ্ধ করতে পারেনি। 

প্রসঙ্গত, বিশিষ্ট আইনজীবী বিমল চট্টোপাধ্যায় তৃণমূলের আমলে রাজ্যের দ্বিতীয় অ্যাডভোকেট জেনারেল ছিলেন। কিন্তু, শারীরিক অসুস্থতার জন্য তিনি দায়িত্ব থেকে সরে যান। পরে জানা যায় তাঁর উত্তরসূরি জয়ন্ত দত্তর মতো তাঁর সঙ্গেও নানা কারণে রাজ্য সরকারের মতবিরোধ দেখা দিয়েছিল। আইনের পথে চলতে গিয়ে শাসকদলের নির্দেশকে অন্ধ ভাবে পালন করতে পারেননি৷ তবে কোনও দিনই তিনি প্রকাশ্যে সরকারের বিরোধিতা করেননি৷ তিনি যখন অ্যাডভোকেট জেনারেল ছিলেন, তখন এসএসসি’র আইনজীবী ছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়৷ বিমল চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘অভিজিৎ আমার জুনিয়র৷ প্রতিটা মুহূর্তে দায়িত্ববোধের সঙ্গে কাজ করেছে৷ ও যে সকল সাহসী পদক্ষেপ করেছে, তাতে আমি বিস্মিত৷ ও যে এতটা সাহসী বিচারতি হবে, তা আইনজীবী থাকার সময় বুঝতে পারিনি৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘বিচারপতি হিসাবে অভিজিৎ-এর কিছু পদক্ষেপ নিয়ে আমার ভিন্নমত রয়েছে৷ আইনজীবী মহলে তা নিয়ে কথাও বলেছি৷ সম্ভবত ওঁর অভিজ্ঞতা কম বলে এটা হয়ে থাকতে পারে৷ তবে ও যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে তা অভাবনীয়৷’’

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মমলা প্রসঙ্গে বিমল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অনেক মামলা লড়েছি৷ তখনও দেখেছি, আজও দেখি অন্যায়গুলো আড়ালের চেষ্টা হয়েছে৷’’ তিনি মনে করেন, যে সকল মন্ত্রী গ্রেফতার হচ্ছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআই-ইডি তদন্ত করছে, তাঁদের এবার সড়ে দাঁড়ানো উচিত৷