কলকাতা: গ্রুপ ডি নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হল। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এমন নির্দেশ দিয়েছেন লক্ষী টুঙ্গার করা নিয়োগ দুর্নীতির মামলায়। তাঁর বক্তব্য, তিনি বিশ্বাস করেন না যে অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেওয়া হয়নি। প্রচুর পরিমাণে টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর এও মন্তব্য, সমস্ত ওএমআর শিট বিকৃত করা হয়েছে বা কারচুপি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- পুরি-সব্জি দিয়ে প্রাতরাশ, রাতে বেগুনপোড়া, থানার খাটে ‘নিশ্চিন্তে’ ঘুম কেষ্টর
আসলে আদালতে দাবি করা হয়েছে, এমনও ঘটনা ঘটেছে যে, একজন পরীক্ষার্থী কিছু না লিখে, সাদা খাতা জমা দিয়ে শূন্য পেয়েছে। অথচ উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের একটি সংস্থা যাকে এসএসসি বরাত দিয়েছিল, তাঁদের হার্ডডিস্কে দেখা যাচ্ছে সে ৪৩ পেয়েছে। এই ইস্যুতে আদালতের এদিনের নির্দেশ, ১০০ টি ওএমআর শিট অবিলম্বে এসএসসির ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে নাম এবং নম্বর সহ। আগামী ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে এই কাজ করতে হবে এবং তাতে উল্লেখ করতে হবে গাজিয়াবাদ এবং এসএসসি দেওয়া প্রাপ্ত নম্বর। কী ভাবে তাঁরা ৪৩ পেলেন, জানতে চায় হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন- উর্ধ্বমুখী তাপমাত্রার পারদ, বড়দিনে শহরে শীতের দেখা মিলবে? কী বলছে হাওয়া অফিস
এদিকে গ্রুপ ডি নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ফের ‘পিসি সরকার’ প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেন বিচারপতি। তিনি বলেন, বাংলা আমার ম্যাজিক দেখার জন্য তৈরি নয়! একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, লাল, নীল, হলুদ সব রঙের নদী যেন সাগরে মিশেছে। ২৫ ডিসেম্বর তো একটা উপহার দিতে হবে! তবে আরও বেশ কিছু নির্দেশ এসেছে। আদালত জানিয়েছে, মামলাকারীর আইনজীবীকে সমস্ত গ্রুপ ডি’র প্যানেলভুক্ত এবং ওএমআর শিটের পরীক্ষা করে পার্থক্য দুটির রিপোর্ট দিতে হবে। সিবিআই রিপোর্ট অনুযায়ী, ৪ হাজার ৪৮৩ জন নিয়োগ পেয়েছে। বৃহস্পতিবার সিবিআইকে ২ হাজার ৮২৩ টি ওএমআর শিট দিতে হবে এসএসসি’কে। পাশাপাশি বিচারপতি, ইডিকে এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে বেআইনি আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ১৭ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
এদিকে রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবিরেশ ভট্টাচার্য গত ৭ ডিসেম্বর একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন। ইডি’র আইনজীবীকে এদিন বিচারপতি বলেন, যখন সুবিরেশ চেয়ারম্যান ছিলেন তখন ওএমআর শিট বিকৃত হয়েছে। শূন্য থেকে নম্বর বেড়ে হয়েছে ৪৩! একটি গোল্লা না পাকিয়েও প্রার্থীরা ওই নম্বর পেয়েছেন। এটা টাকার বিনিময় ছাড়া হতে পারে না। এটা তাঁর বিশ্বাস। ইডি’কে এই আর্থিক লেনদেনের বিষয় তদন্ত করতে হবে। কেউ যাতে ছাড়া পায় না তা দেখতে হবে। তাঁর মন্তব্য, দ্রুত তদন্ত শেষ করতে হবে, অনেক কাকাতুয়া আছে তাঁরা অনেক কিছুই বকবে।