কলকাতা: আশঙ্কার মেঘ ঘনাচ্ছিল দিন কয়েক আগেই থেকেই। রবিবার বিকেলের পর থেকে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। অতঃপর সোমবার বেলা গড়াতেই দুঃসংবাদ। মিষ্টি ভালোবাসার ছবি তৈরি করা পরিচালক তরুণ মজুমদার আর নেই৷ ৯১ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। পলাতক ছবির পরিচালক তরুণ মজুমদার সত্যিই এবার চলে গেলেন।
দীর্ঘ সময় ধরেই তিনি শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। কিডনির সমস্যা ছিল অনেক দিন ধরেই। এছাড়াও বার্ধক্যজনিত একাধিক রোগ শরীরে বাসা বেঁধেছিল৷ গত ১৪ জুন শারীরিক সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এসএসকেএম হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছিল। আইসিইউকে রেখে তার চিকিৎসা চলছিল। অতি সঙ্কটজনক অবস্থায় চলে গিয়েছিলেন তিনি। স্বাস্থের অবনতি হয়। বিশেষ মেডিকেল বোর্ডও তৈরি হয়েছিল। গত সপ্তাহে শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, চিকিৎসায় কিছুটা সাড়া দিচ্ছেন তরুণবাবু, তবে সঙ্কট কাটেনি। এর মধ্যেই শনিবার জানা যায়, তরুণ মজুমদারের শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হয়েছে। কিছু সময় পরে জানা যায় তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। তখন থেকেই আশঙ্কার মেঘ আবারও ঘনিয়ে আসতে থাকে।
রবিবার রাতেও তার শারীরিক অবস্থা অতি সঙ্কটজনক থাকে। বিশেষ মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সোমবার আর তাকে ধরে রাখা গেল না। বেলা ১১ টা ১৭ মিনিটে তার মৃত্যু হল৷ এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে এই বার্তা জানিয়ে দেওয়া হল। রাজ্য সরকারের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, অরূপ বিশ্বাসরা উপস্থিত হয়েছেন। কিভাবে শেষকৃত্য হবে, পরিচালকের বাড়ির সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেবেন। রাজ্য সরকার সব সময় তাদের সঙ্গে আছেন এই বার্তাও দেওয়া হয়েছে।
সত্যজিৎ রায় সমসাময়িক ছিলেন তরুণ মজুমদার। প্রথম ছবি ছিল চাওয়া পাওয়া। প্রথম ছবিতেই নায়ক নায়িকার ভূমিকায় ছিলেন উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেন। এরপর একের পর এক কালজয়ী সিনেমা তিনি তৈরি করেছেন। তার সিনেমায় গানও ছিল অন্যমাত্রার। সবই সিনেমার গানই হিট আজও, এই সময়েও। পলাতক, দাদার কীর্তি, ভালোবাসা ভালোবাসা, বালিকা বধূ, রাহগির, নিমন্ত্রণ, কুহেলি, শ্রীমান পৃথ্বীরাজ, গণদেবতার মতো একাধিক কালজয়ী সিনেমা তিনি তৈরি করেছেন। পাঁচবার জাতীয় পুরষ্কার তিনি পেয়েছেন। তার শেষ সিনেমা ভালোবাসার বাড়ি। পরিচালক নেই, এই কথা ছড়িয়ে পড়ে মুহূর্তের মধ্যে। তরুণ থেকে মাধবয়সী প্রত্যেকেই তরুণ মজুমদারের সিনেমা দেখে বড় হয়েছেন। ভালো লাগার এক অন্য জায়গায় পরিচালকের ছবি বরাবর থাকে। মনখারাপ ভিড় করেছে অভিনেতা – অভিনেত্রীদের মধ্যেও। টলিউডেও শোকের ছায়া৷