চোখের চিকিৎসা করাতে দুবাইয়ে অভিষেক, ইডির যুক্তিতে উঠছে বহু প্রশ্ন!

চোখের চিকিৎসা করাতে দুবাইয়ে অভিষেক, ইডির যুক্তিতে উঠছে বহু প্রশ্ন!

7f5da2261cddd4b5538f1a9218a16656

কলকাতা:  অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুবাই সফর নিয়ে আপত্তি তুলেছিল ইডি। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্ট তাদের দাবি খারিজ করে দিয়েছে। এরপরই চোখের চিকিৎসা করাতে গত শুক্রবার সস্ত্রীক দুবাই গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ইডি’র আপত্তি উড়িয়ে কলকাতা হাইকোর্ট অভিষেককে দুবাই যাত্রার অনুমতি দিয়েছে। হাইকোর্টে ইডির আইনজীবী অভিযোগ করে জানান, চোখের চিকিৎসা উপলক্ষ মাত্র, আসলে গরু পাচার-কাণ্ডে অভিযুক্ত বিনয় মিশ্রর সঙ্গে বৈঠক করতে দুবাই যাচ্ছেন অভিষেক। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্ট ইডির এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।

উল্টে ইডির উদ্দেশে বিচারপতির প্রশ্ন, তারা যদি জানে বিনয় মিশ্র দুবাইতে রয়েছেন তবে তারা তাঁকে গ্রেফতার করতে উদ্যোগ নিচ্ছে না কেন? এরপরই বিচারপতি অভিষেককে দুবাই যাওয়ার অনুমতি দেন। এরপরই শোনা গিয়েছে বিদেশ মন্ত্রকের মাধ্যমে আমিরশাহি সরকারকে নাকি চিঠি পাঠিয়েছে ইডি। চিঠিতে লেখা হয়েছে, বর্তমানে দুবাইতে রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারতে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তাঁকে জেরা করেছেন তদন্তকারীরা। তিনি চোখের ডাক্তার দেখানোর কথা বলে দুবাই গিয়েছেন। তাঁর গতিবিধির উপর যাতে নজরদারি চালানো হয় সেই অনুরোধ করা হচ্ছে। উল্লেখ্য দুবাইতে যে   চিকিৎসককে চোখ দেখাতে গিয়েছেন অভিষেক তাঁর নাম ও দুবাইয়ে যেখানে তিনি থাকবেন সেখানকার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে তাঁকে। বিচারপতি এমন নির্দেশই দিয়েছেন। সেই সূত্রে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী দুবাই যাওয়ার আগে সফর সংক্রান্ত যাবতীয় নথি ইডি দফতরে জমা দিয়েছেন অভিষেক। বিমানের টিকিট, দুবাইয়ের হাসপাতালের ঠিকানা, ফোন নম্বর-সহ অন্যান্য তথ্য ইডির কলকাতা ও দিল্লির অফিসে জমা দিয়েছেন তিনি। বিশেষ সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।

কিন্তু ইডি যে সমস্ত দাবি করছে তার কতটা সারবত্তা রয়েছে সে প্রশ্ন উঠছে। কারণ সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অত্যন্ত ভাল। কয়েক মাস আগেই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নতুন করে সম্পন্ন করেছে এই দুটি দেশ। এর ফলে নয়াদিল্লি ও দুবাইয়ের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক সম্পূর্ণ অন্য মাত্রা পেয়েছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে দু’দেশের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য সম্ভব হবে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে। শুধু তাই নয়, কিছুদিন আগে আমিরশাহির প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের মৃত্যুর পর ভারত একদিনের জন্য রাষ্ট্রীয় শোক পালনের ঘোষণা করে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে যে দু’দেশের মধ্যে এত ভাল সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি বিনয় মিশ্রকে নাগালে পেতে কতটা চেষ্টা করেছে? উল্লেখ্য কলকাতা হাইকোর্ট ঠিক এই বিষয়টি নিয়েই আলোকপাত করেছে। হাইকোর্টের স্পষ্ট কথা, ইডি যদি সত্যিই জেনে থাকে কয়লা-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত বিনয় মিশ্র বর্তমানে দুবাইতে রয়েছেন তাহলে তাঁকে গ্রেফতার করতে চেষ্টা করা হচ্ছে না কেন? আর সেই সূত্রেই অভিষেক যাতে দুবাই গিয়ে চোখের চিকিৎসা করাতে পারেন সেই অনুমতি দিয়েছে আদালত। এই ইস্যুতে আদালতে ইডি যে বড় ধাক্কা খেয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *