কলকাতা ও আসানসোল: বর্ধমানের পর এবার আসানসোল৷ ফের মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বক্তৃতার মাঝপথে চাকরির আবেদন জানানো প্ল্যাকার্ড ঘিরে ছড়াল বিশৃঙ্খলা৷ যার জেরে তাল কাটল বক্তৃতার৷ মেজাজ হারালেন মুখ্যমন্ত্রী৷
আঙুল উঁচিয়ে প্ল্যাকার্ডধারীদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘‘আমাকে এসব বলে লাভ নেই বাপু! আমি তো চাকরি দিতে চেয়েছিলাম৷ দিচ্ছিও৷ ওরা নিজেরা তো কোনও কাজ করেনি, আমাকেও কাজ করতে দিতে চায় না৷ তাই চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলেই ওরা আদালতে দৌড়ায়৷’’ সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা, আইনজ্ঞ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে ইঙ্গিত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশে সব চাকরি আটকে আছে৷ কেন আটকে আছে, জানতে হলে সিপিএমের আইনজীবীদের কাছে যান! ওঁরাই বলতে পারবে, ওঁরা কেন এমন করছে৷’’
বস্তুত, সোমবার থেকে তিনদিনের বর্ধমান সফরে এসেছেন তৃণমূল নেত্রী৷ সোমবার তাঁর সভা ছিল বর্ধমানে গোদার মাঠে৷ ভিড়ে ঠাসা সেই সমাবেশে রীতিমত প্ল্যাকার্ড তুলে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন কয়েকজন চাকরী প্রার্থী। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, ২০১৪ সালে প্রাইমারি টেটে পাশ করেন দুর্গাপুরের বাসিন্দা স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায় ভট্টাচার্য ও আসানসোলের বাসিন্দা সোমা কর। এরা দু’জন সোমবার মুখ্যমন্ত্রী সভায় উপস্থিত ছিলেন। তারা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরির দাবি করেন। তবে পুলিশ অতি সক্রিয়তা দেখিয়ে চাকরি প্রার্থীদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ড কেড়ে নেয়। পরে অবশ্য সভা শেষে দুই চাকরী প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন। মুখ্যমন্ত্রী তাদের সঙ্গে কথা বলেন। দেখা করার পর চাকরিপ্রার্থী সোমা কর বলেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের দাবি শুনে আশ্বস্ত করেছেন। এর আগে বেশ কয়েকটি সভায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে চাকরি প্রার্থী সোমা কর দেখা করার চেষ্টা করেন। পুলিশের ধাক্কাধাক্কিতে তার হাতে আঘাত লাগে বলে তিনি জানান। অন্য একজন চাকরিপ্রার্থী স্বাতী ভট্টাচার্য বলেন, মুখ্যমন্ত্রী চাকরির প্রক্রিয়া চলছে বলে তাদের আশ্বস্ত করেন৷
এদিন অবশ্য শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, সিপিএম-বিজেপি মিলে নাকট করছে। পুলিশ তড়িঘড়ি তাদের সভা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। যার জেরে সাময়িক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল৷ যে কারণে মঙ্গলবার আসানসোলের কর্মিসভায় বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷ তারপরও সেই সব এড়িয়ে চাকরি প্রার্থীরা কীভাবে ঢুকে পড়লেন দলের কর্মিসভায় তা নিয়ে প্রশাসন এবং দলের অন্দরে শুরু হয়েছে চর্চা।