নিজস্ব প্রতিনিধি: নতুন করে তরজা শুরু হল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ নিয়ে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নাগরিকত্ব ইস্যুতে সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন তাতে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হবে এটাই স্বাভাবিক। যদিও প্রধানমন্ত্রীর মুখে সিএএ-র কথা শোনা যায়নি। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাজনৈতিক মহল মনে করছে মোদি যা বলেছেন তাতে সিএএ শীঘ্রই চালু হবে, এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী গুজরাটের দুটি জেলায় অ-মুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিচ্ছে কেন্দ্র। যে ঘটনা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এই আবহের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোমবার গুরু নানকের জন্মজয়ন্তীর প্রাক্কালে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যে মন্তব্য করেছেন তাতে মনে করা হচ্ছে শীঘ্রই দেশজুড়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ চালু করা হবে। ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “বিভাজনের সময় পাঞ্জাবের মানুষের আত্মত্যাগের কথা ভেবে কেন্দ্রীয় সরকার বিভাজন বিভীষিকা স্মরণ দিবস পালন করছে। বিভাজনের ফলে বহু হিন্দু এবং শিখ পরিবারকে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া আমরা শুরু করেছি। গুজরাটে কীভাবে বিদেশে অত্যাচারের শিকার হওয়া শিখ পরিবারগুলিকে আমরা নাগরিকত্ব দিচ্ছি তা আপনারা দেখেছেন। এই সিদ্ধান্ত বিশ্বের সব প্রান্তের শিখদের মধ্যে বিশ্বাস আনবে যে ভারত তাঁদেরই দেশ।” প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য অর্জুন রাম মেঘওয়াল গত সোমবার পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে সিএএ দ্রুত কার্যকর করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। সেদিন বনগাঁর ঠাকুরবাড়িতে এসে মতুয়াদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, কিছু টেকনিক্যাল কারণের জন্য হয়ত সময় লাগছে। কিন্তু সবাইকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে যে সমস্ত অ-মুসলিম শরণার্থী আসবেন তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু যেভাবে সেখানে ধর্মের উল্লেখ করা হয়েছে তাতেই দেখা দিয়েছে বিতর্ক। বিজেপি বিরোধীদের দাবি ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়া চলবে না। ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে কিন্তু ধর্মের উল্লেখ নেই। এই ইস্যুতেই একটা সময় দেশ জুড়ে নজিরবিহীন আন্দোলন করে বিরোধীরা। যদিও কোভিড পরিস্থিতিতে বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়। কিন্তু গুজরাট ও হিমাচল প্রদেশ নির্বাচনের আগে যেভাবে গুজরাটের দুটি জেলায় নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তবে কি সিএএ কেন্দ্রীয় সরকার শীঘ্রই চালু করে দেবে দেশজুড়ে? এই চর্চা যথারীতি শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাঞ্জাবে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই মতুয়ারা নতুন করে আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন। তাঁদের আশা শীঘ্রই কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাঁদের নাগরিকত্ব প্রদান করবে।