কলকাতা: শুক্রবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় পর্ষদ আবার মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল। পর্ষদ পক্ষের আইনজীবী কিশোর দত্ত ডিভিশন বেঞ্চে ফের একবার এই প্রশ্ন তুললেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রাথমিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে দুটি বিষয় ভাগ করা হয়। এক, মেধার ভিত্তিতে, দ্বিতীয়, প্রাক্তন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের পূর্বের নির্দেশে পর্ষদের ভুল প্রশ্নের উত্তর দিয়ে নম্বর পাওয়া প্রার্থী। এই দুটি বিষয় সামনে রেখেই নিয়োগ করা হয়েছিল। পর্ষদের প্রশ্ন ভুল বিষয়টা সামনে আসা এবং আদালতের নির্দেশের পরই পর্ষদের পক্ষ থেকে নম্বর বাড়ানো হয়। নিয়োগ আইন মেনেই করা হয়েছে বলে দাবি পর্ষদের। কিন্তু বিরোধী আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বললেন সম্পূর্ণ উল্টো কথা। তাঁর বক্তব্য, দুর্নীতির প্রশ্রয় দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন- ‘দুর্নীতি’-র পাকে SSC! অস্বচ্ছতা রুখতে পরীক্ষা পদ্ধতিতেই বড় বদল আনতে চলেছে কমিশন
এদিন আদালতে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার পর্ষদের আইনজীবীর উদ্দেশ্য প্রশ্ন করেন, সমস্যা এক নম্বর দেওয়া নিয়ে। চাকরি প্রার্থীদের দাবি এটা স্বাভাবিক নিয়ম মেনে নিয়োগ নয়, একটা দুর্নীতি। এবিষয়ে পর্ষদের বক্তব্য কী? এর উত্তরে বোর্ডের আইনজীবী জানান, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের যে নিয়ম বা আইন রয়েছে তা মেনেই নিয়োগ করা হয়েছে এবং অবশ্যই স্বচ্ছতা বজায় রেখে। যারা ১ নম্বর বাড়ানো নিয়ে অভিযোগ তুলছেন তা সঠিক নয়। এই প্রেক্ষিতেই অভিযোগকারী প্রার্থীদের পক্ষের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য ডিভিশন বেঞ্চে এদিন জানান, এই মামলায় মেঘের আড়াল থেকে দুর্নীতির প্রশ্রয় দিচ্ছে রাজ্য সরকার! সিবিআই রিপোর্ট বলেছে, বেশ কিছু পরীক্ষার্থী সাদা খাতা জমা দিয়েছেন। তারাও চাকরি পেয়েছেন। বোর্ড সিঙ্গল বেঞ্চের কাছে জানিয়েছিল, তারা বিক্ষোভকারীদের চাকরি দিয়েছিল। আবার কখনো বলছে ভুল প্রশ্নের উত্তর দিয়ে প্রার্থীদের চাকরি দিয়েছে। কখনো আবার বলা হচ্ছে মেধা প্রার্থীদের। পর্ষদের দেওয়া তথ্যের সমস্যা রয়েছে।
তিনি আরও দাবি করে জানান, দ্বিতীয় প্যানেলের নিয়োগটাই সম্পূর্ণ বেআইনি। প্যানেলের বৈধতা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ২৬৭ জনের মধ্যে চারজন মামলা করেছিল তাই চাকরি দিয়েছে। বাকিদের বোর্ড চাকরি দিল কী করে? উঠছে প্রশ্ন। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি তালুকদার বিকাশের কাছে জানতে চান যে তিনি কী চাইছেন? উত্তরে বিকাশ জানান, স্বচ্ছতা থাকলে পর্ষদ ওয়েমার সিট দিক। স্বচ্ছ ওয়েমার সিট দিয়ে নিয়োগ নিয়ম মেনে করা হোক। দুর্নীতি সামনে আসুক। দোষীরা শান্তি পাক। তিনি এটাই চাইছেন। আগামী মঙ্গলবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।