কলকাতা: উপযুক্ত নম্বর না থাকার পরেও এসএসসির মেধা তালিকায় শীর্ষে ছিল অঙ্কিতা অধিকারীর নাম। পেয়ে যান চাকরি। ইতিমধ্যে এই দুর্নীতির তদন্ত করছে সিবিআই। যদিও তাঁকে এখনও সিবিআই-য়ের জেরার মুখে পড়তে হয়নি। তবে তাঁর বাবা তথা রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীকে সিবিআই তিনবার ডেকে পাঠিয়েছে। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও জেরা করেছে সিবিআই। এবার সেই অঙ্কিতা অধিকারীর নাম উঠল কলেজ সার্ভিস কমিশনের ইন্টারভিউয়ের তালিকায়। তবে কলেজ সার্ভিস কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, যোগ্য বলেই এক্ষেত্রে তিনি সুযোগ পেয়েছেন। তবে অঙ্কিতা অধিকারী ইন্টারভিউতে গিয়েছিলেন কি না জানা যায়নি।
কলেজ সার্ভিস কমিশনের ইন্টারভিউয়ের জন্য ২৬ এপ্রিল ডাক পেয়েছিলেন পরেশ কন্যা অঙ্কিতা অধিকারী। এই প্রসঙ্গে কমিশনের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, অঙ্কিতা অধিকারী যোগ্য বলেই তাঁকে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হয়েছে। এটা নিয়ে নতুন করে জল্পনা তৈরি করার কোনও কারণ নেই। এমন কোনও নির্দেশ আসেনি যে, তাঁকে সিএসসির ইন্টারভিউতে ডাকা যাবে না। পাশাপাশি কলেজ সার্ভিস কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, এখানে সমস্ত আবেদনকারীকে সমান। অ্যাফাবেটিক্যালি তাঁর নাম প্রথমের দিকে রয়েছে। সেই কারণে তাঁকে ২৬ এপ্রিল ডাকা হয়েছে। ওই দিন প্রথমভাগেই তাঁর ইন্টারভিউ ছিল বলে জানা গিয়েছে। তাঁর রেজিস্টেশন নম্বর ছিল ২০১০৩৩১০। রাজারহাটে সংস্থার দফতরে ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা করেছিল সিএসসি। কলেজ সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইডের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক পদের নিয়োগের তালিকায় অঙ্কিতা অধিকারীর নাম ওঠে। তিনি প্রথম থেকেই কলেজে অধ্যপনা করতে আগ্রহী। তাই তিনি স্কুলের শিক্ষিকা থাকার সময়েই আবেদন করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তবে ইন্টারভিউ তিনি দিয়েছেন কি না, এই বিষয়ে স্পষ্ট কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, সম্প্রতি স্কুলের চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছেন অঙ্কিতা অধিকারী। হাইকোর্টের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তিনি নিজেকে আর শিক্ষিকা হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন না। তবে স্কুলের শিক্ষিকা হিসেবে তিনি আর কাজ করতে না পারলেও অধ্যাপনার কাজ করতে পারবেন বলেই মনে করা হচ্ছে। আইনি দিক থেকেও স্কুলের শিক্ষকতা করার সময়ই কেউ কলেজের অধ্যপনার জন্য আবেদন করতে পারেন। এখানে কোনও ভুল নেই। তবে বিরোধীরা ইতিমধ্যে বিষয়টিকে কেন্দ্র করে সরব হয়েছেন।
নম্বর কম থাকার পরেও এসএসসির মেধা তালিকায় শীর্ষে ছিল অঙ্কিতা অধিকারীর নাম। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ববিতা সরকার নামের এক আবেদনকারী। আদালতের নির্দেশে অঙ্কিতা অধিকারীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁকে ৪১ মাসের বেতন দুই কিস্তিতে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ঘটনার জেরে মন্ত্রী পরেশ অধিকারী তিনবার সিবিআইয়ের জেরার মুখে পড়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এখন দেখার, শিক্ষকতার চাকরি খোয়ানোর পর অধ্যপনার চাকরিটা পান কি না অঙ্কিতা!