কলকাতা: মঙ্গলবার রাতেই তাঁর সিবিআই দপ্তরে এসে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মঙ্গল, বুধ পেরিয়ে গেলেও এখনও দেখা নেই মন্ত্রী এবং মন্ত্রীকন্যার। আর তাই এবার রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে আরও কোণঠাসা করতে তাঁর বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ এনে নতুন একটি FIR দায়ের করল সিবিআই। জানা যাচ্ছে, সিবিআইয়ের এই নতুন FIR-এ মন্ত্রী পরেশ অধিকারী ছাড়াও মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর নামও রয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশ না মেনে তাঁরা সিবিআইয়ের মুখোমুখি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তাঁদের বিরুদ্ধে ফের কড়া পদক্ষেপ নিতে কার্যত বাধ্য হল সিবিআই। জানা যাচ্ছে, মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের ১২০B এবং ৪২০ ধারায় FIR দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর আইনজীবী জানান, যেই মুহুর্তে মন্ত্রী এবং তাঁর কন্যা রয়েছেন কোচবিহারে। বাগডোগরা থেকে তাঁদের কলকাতায় আসার ফ্লাইট সন্ধ্যা ৬:৩০ এ। তাই দুপুর তিনটার মধ্যে সিবিআই দফতরে হাজিরা দেওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকালেই মন্ত্রী এবং মন্ত্রী কন্যাকে নতুন করে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে তিনটার মধ্যে সিবিআই দপ্তরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সেই নির্দেশের পরেই আদালতের কাছে কিছুটা সময় চান মন্ত্রীর আইনজীবী। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিধাননগর পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেন পলাশ চন্দ্র অধিকারী দমদম বিমানবন্দরে নামার পরেই তাঁকে যেন এস্কর্ট করে সরাসরি সিবিআই দপ্তরে পৌঁছে দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে আদালতের নির্দেশের একটি কপি বিধাননগর সিপিকে পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার সকাল থেকেই মন্ত্রী পরেশ চন্দ্র অধিকারী এবং তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। বুধবার ভোরে তাঁদের শেষবার বর্ধমান জংশন স্টেশনে দেখা যায়। এদিকে বুধবার সকালেই পদাতিক এক্সপ্রেসে করে কলকাতায় আসার কথা ছিল মন্ত্রীর এবং মন্ত্রী কন্যার। কিন্তু ট্রেন সকালে কলকাতা ঢুকলেও তাতে মন্ত্রী বা মন্ত্রীর কন্যা কেউই আসেননি। ফলে স্বাভাবতই প্রশ্ন শুরু হয়েছিল যে, মাঝপথে ট্রেন থেকে নেমে কোথায় গেলেন তাঁরা? এদিকে একাধিকবার হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হলেও সেই নির্দেশ অমান্য করায় সিবিআই এবং কলকাতা হাইকোর্ট যে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আরও কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে তা বুধবারই কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সেই সম্ভাবনাকেই সত্যিতে রূপান্তরিত করে অসহযোগিতার অভিযোগে পাল্টা FIR দায়ের করল সিবিআই।