কলকাতা: সম্প্রতি এসএসসি সহ সরকারি প্রতিষ্ঠানের একাধিক দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক নির্দেশ দিয়েছেন। এর জেরে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে। ঘটনায় বিচারপতির পাশে এসে দাঁড়ালেন রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। যে ভাবে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছে, তাতে তাঁর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ।
রাজ্যের শিক্ষক, শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী ও সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, বিগত কিছু সময় ধরে শিক্ষার পবিত্র অঙ্গণকে দুর্নীতিমুক্ত করতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যে উপযুক্ত নির্দেশ দিয়েছেন, তা পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক-শিক্ষিকা সমাজ, অভিভাবকবৃন্দ ও আপামর সাধারণ মানুষের সমর্থন রয়েছে। তারপরেও একশ্রেণির সুবিধাবাদী ও দুর্নীতিপরায়ণ গোষ্ঠীর অসাংবিধানিক ও বেআইনি বিরোধিতায় অযথা আদালতের মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে। ঘটনায় বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গোপাধ্যায়ের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী নিয়োগে অনিয়ম, ট্রান্সফার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব, যোগ্যপ্রার্থী নিয়োগে দুর্নীতি, বকেয়া বেতন, চাকরীপ্রার্থীদের দিনের পর দিন সঙ্গত আন্দোলন, শিক্ষকদের পেশাগত নানা সমস্যা ইত্যাদির মধ্যে যে দুর্নীতি ও অনাচার হয়েছে, হয়ে চলেছে, তার বিরুদ্ধে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর প্রতিটি নির্দেশকে স্বাগত জানাচ্ছে বাংলার শিক্ষকসমাজের একাংশ৷ দাবি সংগঠনের৷
গত ২১ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টে একটি সংক্ষিপ্ত অভিযান ও প্রধান বিচারপতির কাছে রাজ্যের সমস্ত শিক্ষক, শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী ও সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ বিচারব্যবস্থাকে রক্ষা করার এবং বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে স্বচ্ছ ও স্বাধীনভাবে কাজ করে যাওয়ার উপযুক্ত, নিরাপদ ও সুস্থ পরিবেশ গড়ে তুলতে অনুরোধ করা হয়েছে। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, দুর্নীতি শিক্ষাব্যবস্থার ওপর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। ঘটনার জেরে চিন্তিত রাজ্যের সচেতন নাগরিকরা। এর বিরুদ্ধে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের লড়াই চলবে বলে জানানো হয়েছে। এই কর্মসূচির উদ্যোক্তা চন্দন গরাই, অনুপ মাহার, শন্তু শেখর মাঝি, অমিত রঞ্জন ভূনিয়া, রাজকুমার লাহা, বিধান নস্কর সহ শিক্ষক শিক্ষিকা বৃন্দ জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে সাধারণ মানুষ শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী ও শিক্ষিত সমাজ পথে নামতেও প্রস্তুত।