কলকাতা: মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই সুন্দরবনে আছড়ে পড়তে পারে আরও একটি ঘূর্ণিঝড়। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। গত দুই বছরে আমফান ও ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে রাজ্যের উপকূলবাসী ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলেন। তাই এবারে কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চাইছে না প্রশাসন। শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর ব্লক অফিসে বিপর্যয় কীভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব, সেই নিয়ে বৈঠক হয়। এই বৈঠকে স্থানীয় বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা, সেচ, বিদ্যুৎ ও কৃষি দফতরের আধিকারিকরা হাজিরা ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
মে মাসের প্রথম সপ্তাহে নতুন ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে, তার আগেই বেহাল সমুদ্র ও নদীর বাঁধ নির্মাণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। দ্রুত ক্ষতিগ্রস্থ নদী বাঁধ চিহ্নিত করা ও মেরামত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া বিপর্যয় মোকাবিলা করতে আগে থেকে কী কী প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, সেই নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। প্রশাসনিক আধিকারিকদের পাশাপাশি বৈঠকে জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, মে মাসের প্রথম সপ্তাহে দক্ষিণ আন্দামান সাগরে ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হবে। ৫ মে ওই ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপে সৃষ্টি হবে। এই নিম্নচাপ ক্রমশ দক্ষিণ ও মধ্য বঙ্গোপসাগরের দিকে এগোবে। শেষপর্যন্ত এই নিম্নচাপ কতোটা শক্তিশালী হয় এবং কোন দিকে এগোয়, সেই দিকে আবহাওয়া দফতর নজর রাখছে বলে জানা গিয়েছে। আলিপুর আবহাওয় দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, বঙ্গোপসাগরের ওপর দিয়ে যখন এই নিম্নচাপ এগোবে, তখন আরও শক্তিশালী হবে। সেক্ষেত্রে এই নিম্নচাপের ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তবে আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ে এই নিম্নচাপ কবে পরিণত হবে, তা এখনও বলা সম্ভব নয়।
এই মে মাসেই রাজ্যে একের পর এক ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছে। আয়লা, আমফান, ইয়াসের মতো ঘূর্ণিঝড় মানুষের মনে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে। তাই নতুন করে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় ঘুম উড়েছে উপকূলবাসীদের। আবহাওয়াবিদদের মতে ঘূর্ণিঝড় তৈরির আদর্শ সময় হল মে মাস।