শুধু চাকরি ‘বিক্রি’ নয়, অন্য সূত্র ধরেও জমেছে নগদের পাহাড়! সন্দেহ ED-র

শুধু চাকরি ‘বিক্রি’ নয়, অন্য সূত্র ধরেও জমেছে নগদের পাহাড়! সন্দেহ ED-র

কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বেনজির তল্লাশি চালিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুটি ফ্ল্যাট থেকে ৫০ কোটি নগদ উদ্ধার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)৷ যদিও জেরার মুখে অর্পিতা বারবার বলেছেন, এই টাকা তাঁর নয়, পার্থের৷ অন্যদিকে, প্রাক্তন মন্ত্রীর দাবি, এটা তাঁর টাকা নয়৷ উদ্ধার হয়েছে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে৷ তিনিই বলতে পারবেন৷ ইডি-র অফিসাররা জানিয়েছেন, তদন্তে এখনও অসহযোগিতা করছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ আজ ফের পার্থ ও অর্পিতাকে তোলা হবে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে৷ 

আরও পড়ুন- বৃহস্পতির সকালে বোলপুর থেকে কলকাতার উদ্দেশে রওনা কেষ্ট-কন্যার, গন্তব্য হাই কোর্ট?

জানা গিয়েছে, বুধবার প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে গিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তাঁর মূলত টাকার উৎস, কিছু যৌথ সম্পত্তি, মেয়ে জামাইয়ের তহবিল এবং একটি ট্রাস্ট নিয়ে প্রশ্ন করেন। এর জাবাবে পার্থ কখনও বলেন “জানি না”, কখনও বললেন, “আগেই তো বলেছি।” তাঁর স্পষ্ট অসংগতি৷ ইডি আধিকারিকদের সন্দেহ, এই বিপুল অর্থ স্রেফ চাকরি ‘বিক্রি’র নয়। এর একটা বড় অংশ গত ক’মাসে এসেছে বিকল্প সূত্র ধরে৷ যে চক্রের সঙ্গে পার্থর দু-তিনজন ঘনিষ্ঠ জড়িত রয়েছে। কারণএই নোটগুলি দীর্ঘদিন ধরে মজুত করা নয়। 

ইডি-র দাবি, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি থেকে যে টাকা এসেছে, তা আগেই বিভিন্ন সম্পত্তি কেনার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে। সূত্রের খবর, টাকার প্রশ্নে পার্থ এদিন ইডি অফিসারদের বারবার বলেছেন, “যার বাড়ি সে জানে।” তবে তাঁদের যৌথ সম্পত্তি ও ট্রাস্টের তহবিল নিয়ে প্রশ্নের মুখে কার্যত অস্বস্তিতে পড়েন তিনি। ইডি অফিসাররা তাঁর বয়ানের অসঙ্গতি ধরতে একই প্রশ্ন একাধিকবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে করেন। বিরক্ত হয়ে পার্থ বলেই বসেন, “এক কথা আর কতবার বলব?” 

জেরার সময় ইডির এক অফিসার পার্থকে বলেন, “অন্য অভিযুক্তের সঙ্গে আপনার কথা তো মিলছে না।” সে কথা শুনেই পার্থ একটু থতমত খেয়ে যান। ‘অপা’ বাড়ি নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পার্থ বলে ওঠেন, “আপানা অর্পিতাকে বেশি উত্ত্যক্ত করবেন না।” সেটা শুনেই ইডি অফিসাররা বলেন, ‘‘আপনিই তো বলছেন, উদ্ধার হওয়া সব টাকা অর্পিতার। তাই তাঁকে তো প্রশ্ন করতেই হবে।’’ এর পরেই পার্থ বলেন, “আমাকে আরেকটু ভাববার সময় দিন।” এদিন ট্রাস্ট আর মেয়ে জামাইকে নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। কোনওটারই সদুত্তর দেননি প্রাক্তন মন্ত্রী৷ এর পর আর জেরাপর্ব এগোয়নি। আজ আদালতে তোলা হবে পার্থ এবং অর্পিতাকে। এদিন আদালতে তোলার পর পার্থর জামিনের আবেদন করা হবে কি না, তা অবশ্য রাত পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি।