কলকাতা: কলকাতা শহর জুড়ে একের পর এক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এক মাসের মাথায় একের পর এক আত্মহত্যার ঘটনা শহরের বাসিন্দাদের আতঙ্কিত করে তুলেছে। এবার গড়ফা থেকে লিসা মারি নামের এক ব্যাঙ্ককর্মীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিন অভিনেত্রীর পাশাপাশি সল্টলেকের মা ও মেয়ের আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। রবিবারই কসবায় ১৮ বছরের এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছেন। তারপরেই গড়ফার ঘটনা নতুন করে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার রাতে স্ত্রীর ঝুলন্ত দেহ দেখে গড়ফা থানায় খবর দেন সোনু পণ্ডিত নামের এক ব্যক্তি। পুলিশ মৃতদেহটি ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। ওই মহিলা স্বামীর সঙ্গে গড়ফার গীতাঞ্জলী পার্ক সোসাইটির একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, সোনু পণ্ডিত ওই যুবতীর দ্বিতীয় স্বামী। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, প্রথমপক্ষের সন্তানকে নিজের কাছে রাখতে চেয়েছিলেন লিসা। সেই কারণেই স্বামীর সঙ্গে অশান্তি। তাঁর জেরেই তিনি আত্মহত্যা করছেন।
পরিবার সূত্রে জানতে পেরেছে পুলিশ, লিসার আগের পক্ষের স্বামী বেঙ্গালুরুতে থাকেন। সেখানেই লিসার প্রথমপক্ষের ছেলে থাকে। তবে লিসার ছেলে মাঝে মাঝে তাঁর কাছে আসত। সেই নিয়ে অশান্তি শুরু হয় বলে পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে। লিসার দেহের পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে পুলিশের সূত্রে জানা গিয়েছে। সেখানে তাঁর আত্মহত্যার জন্য স্পষ্ট করে দ্বিতীয়পক্ষের স্বামী সোনু পণ্ডিতকে দায়ী করা হচ্ছে। যদিও প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সোনু লিসার দ্বিতীয় স্বামী ছিলেন বলে জানতেন না। শুধু তাই নয়, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনও অশান্তি ছিল বলে তাঁদের জানা নেই। দুই তিন বছর আগে ওই আবাসনে ভাড়া থাকতে শুরু করেছিলেন লিসা ও সোনু। তবে লিসা যে এই ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তা প্রতিবেশীরা কল্পনা করতে পারেননি। ইতিমধ্যে পুলিশ সোনু পণ্ডিতকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে।
প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে শহরে একের পর আত্মহত্যা আশঙ্কার পারদ যেন বাড়াতে শুরু করেছে। প্রথমে পল্লবী দে নামের এক টেলিভিনেত্রী আত্মহত্যা করেন। তারপর থেকে একের পর এক আত্মহ্যা হতে থাকে। বিদিশা দে মজুমদার, মঞ্জুষা নামের দুই উঠতি মডেস আত্মহত্যা করেন। সেই রেশ কাটার আগে সল্টলেকে মা ও মেয়ের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান বিষ খেয়ে মা ও মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন।রবিবার ১৮ বছরের এক তরুণী আত্মহত্যা করেন। তারমধ্যেই লিসার আত্মহত্যার কথা প্রকাশ্যে আসে। প্রতি ক্ষেত্রে কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সম্পর্কের টানা পোড়েন।