অপহরণকারীদের ‘বোকা বানিয়ে’ চম্পট দিয়েছে ৬ বছরের খুদে! বিশ্বাস হচ্ছে না পুলিশের

অপহরণকারীদের ‘বোকা বানিয়ে’ চম্পট দিয়েছে ৬ বছরের খুদে! বিশ্বাস হচ্ছে না পুলিশের

escapes kidnappers

ভগবানগোলা: বাড়ির সামনের মাঠে খেলছিল সে। কিন্তু হঠাৎ করেই ৬ বছর বয়সী খুদে রাজার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। চারিদিকে খোঁজাখুঁজির পরও যখন তাকে পাওয়া গেল না তখন পরিবার দাবি করে যে তাদের ছেলেকে কেউ অপহরণ করেছে। পুলিশের কাছে খবর দেওয়ার আগেই রাজাকে ছাড়াতে দু’লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তিন অপহরণকারী ফোন করে বলেও জানা যায়। তবে আশ্চর্যের বিষয় এই, অপহরণকারী ঘোল খাইয়ে ওই ৬ বছরের খুদে নিজেই বাড়ি চলে আসে! ঘটনায় হুলস্থূল পড়েছে এলাকায়। পুলিশ ব্যাপারটি বিশ্বাস করতে পারছে না। তারা অন্য কিছু অনুমান করছে। 

রবিবার বিকেল থেকে খোঁজ মিলছিল না ভগবানগোলার কুঠিরামপুর অঞ্চলের বরবড়িয়া এলাকার বাসিন্দা ওই খুদের। চারিদিকে হইহই শুরু হলে পরিবার নাকি জানতে পারে যে তাকে তিনজন অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছে। তার পরে লক্ষাধিক টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে শিশুর পরিবারে। ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। কিন্তু হঠাৎ করেই মঙ্গলবার সকালে রাজা বাড়ি চলে আসে! কী ভাবে যে বাড়ি ফিরল, কারা তাকে দিয়ে গেল, সে যেন এক অদ্ভুত কাহিনী। আসলে শিশুটি যা বলছে তা পুরোপুরি মানতে চাইছে না পুলিশ। ঘটনা হল, ৬ বছরের খুদে যা বলছে তা এক পলকে মানা সম্ভবও নয়। 

ওই খুদে পুলিশকে জানিয়েছে, অপহরণকারীরা তাকে নিয়ে গিয়ে এক শুনশান বাড়িতে রেখেছিল। পরে তাদের ঘুমোনোর সুযোগ নিয়ে সে বাড়ির ছাদে চলে যায়। তারপর সেখান থেকে পাশে থাকা খড়ের গাদায় লাফ মারে। এরপর অজানা রাস্তা দিয়েই প্রায় আধ ঘণ্টা ছুটে এসে সে এক সবজি বিক্রেতার কাছে পৌঁছোয়। ওই ব্যক্তিই নিজের ফোন থেকে রাজার বাড়িতে ফোন করে খবর দেন। পরে বাবা-মা গিয়ে ছেলেকে নিয়ে আসেন। ছ’বছরের শিশুর এই উপস্থিত বুদ্ধি আর সাহস তাক লাগিয়েছে সকলকে। যদিও পুলিশের ভাবনা ভিন্ন। 

৬ বছরের শিশুর বলা সব কথাই পুরো ‘সত্যি’ বলে মানতে চাইছেন না পুলিশকর্তারা। তারা মনে করছেন, রাজা এমনিতেই ডানপিটে, তাই হয়তো সে নিজেই বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। তার পর একটি জায়গায় ঘুমিয়ে পড়ে। পরে ভোরে ঘুম ভাঙার পর একজন সবজি বিক্রেতার কাছে গিয়ে অপহরণের ‘গল্প’ দেয়। তাহলে মুক্তিপণ চেয়ে কারা ফোন করল? পুলিশের ধারণা, অপহরণের ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই কেউ বা কারা এলাকায় ঘোষণা করে দেয়, শিশুর খবর দিতে পারলে পুরস্কার দেওয়া হবে। তারই লোভে মুক্তিপণ চেয়ে বাড়িতে ফোন করে ওই তিনজন। অনুমান, এরা কেউই অপহরণের সঙ্গে জড়িত নয়। যদিও জানা গিয়েছে, তিনজনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।   

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *