কলকাতা: প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার পরেও যে এতটা চাপে পরে যাবে তৃণমূল কংগ্রেস তা হয়তো কেউ ভাবেনি। আজ একদিনে শাসক দলের ৫ জন বিধায়ক যোগ দিলেন গেরুয়া শিবিরে! একদিনে ৫, ভাবতে অবাক লাগলেও এই ‘অসাধ্যসাধন’ করেছেন নব্য বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। কারণ আজকের এই মেগা যোগদান পর্বের মূল ‘পাণ্ডা’ তিনিই। একইসঙ্গে এই যোগদান মেলার আসরে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়, সাংসদ অর্জুন সিং, নেতা সব্যসাচী সহ আরও অনেকে।
আজ তৃণমূলের যে’কজন বিধায়ক গেরুয়া শিবিরে নাম লেখালেন তারা হলেন, সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সাতগাছিয়ার বিধায়ক সোনালী গুহ, বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক দিপেন্দু বিশ্বাস, হাওড়ার শিবপুরের বিধায়ক জটু লাহিড়ী, সাকরাইলের বিধায়ক শীতল কুমার সর্দার। এর পাশাপাশি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের তৃণমূল কংগ্রেসের মালদহের হবিবপুরের প্রার্থী সরলা মুরমু। এই ঘটনা ঘটিয়ে বিজেপি দাবি করছে, আসন্ন ভোটের আগেই মালদহ ‘দখল’ করে ফেলেছে তারা। এই প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষেরা দাবি করছেন, মালদা জেলা পরিষদ বিজেপির দখলে। মালদা জেলা পরিষদে বিজেপির সদস্য সংখ্যা ৩৮-এর মধ্যে ২৩ জন। প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী বিদ্রোহের একের পর এক এমন ছবি সামনে এসেছে যে দেখা গিয়েছিল, মালদহে শাসকদলের পরিস্থিতি বিশেষ সুবিধাজনক নয়। অবশেষে আজ যা হল, তাতে এই ব্যাপারটাই পরিস্কার হয়ে গেল।
আরও পড়ুন: বিজেপির ‘দখলে’ মালদা! মোদীর ব্রিগেডের পরেই তৃণমূলে বড় ভাঙন
এদিন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বিজেপিতে যোগ দিয়ে বলেন, তার পুরোনো দল এখন পরিবার গত হয়ে গেছে। স্বামী-স্ত্রী পাশাপাশি দুটো কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছে। যদিও বিজেপির টিকিটে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করবেন কিনা সে ব্যাপারে কোনরকম ইঙ্গিত দিলেন না তিনি। জানালেন দল যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই হবে। অন্যদিকে দীপেন্দু বিশ্বাস জানিয়েছেন, তিনি পারফরম্যান্সে বিশ্বাস করেন। গত চারটি নির্বাচনে দলকে জেতানোর পরেও তাঁকে কেন টিকিট দেওয়া হল না তিনি জানেন না। তাই এখন তিনি যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেই অনুযায়ী কাজ করবেন। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যেমন দাবি করেছেন যে তিনি আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের গোলকিপার, সেই প্রেক্ষিতে দিব্যেন্দুর বিজেপিতে যোগ দিয়েই কটাক্ষ, তিনি স্ট্রাইকার! সরলা মুর্মু জানাচ্ছেন, তাঁর এলাকায় শুরু পোস্ট দেওয়া হয় কিন্তু কোন কাজ করতে দেওয়া হয় না। সেখানকার নেতারা কাজ করতে বাধা দেয়। এখন সেই এলাকায় যত ভালো তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী এবং সদস্য ছিল প্রত্যেকেই এখন বিজেপিতে যোগদান করেছে। অন্যদিকে জটু লাহিড়ীর কটাক্ষ, তৃণমূল কংগ্রেস বাংলায় কোনো রকম উন্নয়নের কাজ করেনি।