বিহারে দখল ৫ আসন, ওয়েইসির উত্থানে চিন্তায় তৃণমূল

বিহারে দখল ৫ আসন, ওয়েইসির উত্থানে চিন্তায় তৃণমূল

কলকাতা: বিহার ভোটে নাটকীয় সমাপতন ভাবাতে শুরু করেছে বাংলার শাসকদলকে৷ বিজেপি’র জয়ে বাড়তে শুরু করেছে তৃণমূলের রক্তচাপ৷ তার উপর যে ভাবে বাংলা লাগোয়া বিহারের জেলাগুলিতে মুসলিম ভোট ব্যাঙ্কের উপর কব্জা জমাল আসাদুদ্দিন ওয়েইসির মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল-মুসলিমিন, তা দেখে ঘামের বিন্দু শাসক দলের কপালে৷ 

আরও পড়ুন- বহাল নিষেধাজ্ঞা, জীবনের গুরুত্বকে অগ্রাধিকার দিয়ে শীর্ষ আদালতে খারিজ বাজি মামলা

বিহারে ২০টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল ওয়েইসির এআইএমআইএম৷ তার মধ্যে ৫টি আসনে জয়ী হয়েছেন তাঁরা৷ ২০১৯ সালে উপনির্বাচনে পাঁচটি আসন জিতে বিহার রাজনীতির প্রাঙ্গনে প্রবেশ করেছিল ওয়েইসির দল৷ তবে আরও ভালো ফল আশা করেছিলেন এআইএমআইএম সুপ্রিমো৷ তিনি বলেন, ‘‘রাজনীতিতে ভুল থেকেই শিক্ষা নিতে হয়৷ বিহারে এআইএমআইএম প্রধান ব্যক্তিগতভাবে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন৷ কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে হাত মেলাতে রাজি হননি৷ বরং বড় বড় দলগুলি অস্পৃশ্যের মতোই আচরণ করেছিল৷’’ তবে তাঁর দল যে ভাবে মহাগাটবন্ধন জোটের ভোট ব্যাঙ্কে ভাগ বসিয়েছে, তাতে ফায়দা লুটেছে আখিরে বিজেপি৷ আর তাৎপর্যপূর্ণভাবে যে পাঁচটি আসনে এআইএমআইএম জয়ী হয়েছে, তার মধ্যে চারটি আসনই বাংলার মালদহ ও উত্তর দিনাজপুর লাগোয়া৷  

২০২১-এ তিনি বিহার সীমান্ত পেরিয়ে তিনি যে বাংলার মাটিতে ঢুকে পড়বেন, সে কথা আগেই ঘোষণা করেছেন৷ ফলে বাংলার মুসলিম ভোট ব্যাঙ্কের উপরেও তার প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে৷ ওয়েইসির প্রবেশে নতুন করে ঘুঁটি সাজাতে হবে শাসক দলকে৷ বিহারে তাঁর দলের ভোট কাটাকাটির জেরেই দোড়গোড়ায় পৌঁছেও কুর্সি ছুঁতে পারেনি মহাজোট৷ ভোট কাটাকাটি প্রসঙ্গে অবশ্য ওয়েইসির বক্তব্য, ‘‘ভোটাররা কারও বাঁধা দাস নয়৷ সব সময় একই দলে ভোট দিতে হবে, তার কী মানে আছে?’’ তবে বাংলা সীমান্তে ওয়েইসির উত্থানে নতুন করে অঙ্ক কষতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ এদিকে, ফল প্রকাশের পরেই এআইএমআইএম-কে ‘ভোট কাটা পার্টি’ বলে মন্তব্য করেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী৷ অন্যদিকে যে দল নিজ রাজ্য তেলেঙ্গানার ১১৯টি আসনের মধ্যে মাত্র ৯টি আসনে লড়ে, তারা বিহারে ২০টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার পরই এআইএমআইএম-কে বিজেপি’র বি টিম বলে তোপ দাগে কংগ্রেস৷ ওয়েইসির পার্টিকে কাজে লাগিয়ে বিহার ভোটে বিজেপি কৌশলী পদক্ষেপ করেছে বলে সুর চড়িয়েছেন অধীরবাবুও৷ ওয়েইসির দল সম্পর্কে ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকেও সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি৷ 

আরও পড়ুন- ভিড়ের চাপে উধাও দূরত্ববিধি, প্রথম দিনেই বেসামাল লোকাল পরিষেবা!

 এআইএমআইএম শুধু বিহারে পাঁচটি আসনেই জয়ী হয়নি৷ তাঁর দলের ভূমিকায় বদলে গিয়েছে হার-জিতের সমীকরণ৷ সাত থেকে আটটি আসনে ভোটের ফলে প্রভাব পড়েছে৷ যা বাংলাকে ভাবতে শুরু করেছে৷ তবে তৃণমূল সূত্রে দাবি, উর্দুভাষী মুসলিমদের মধ্যেই মূলত ওয়েইসির প্রভাব উল্লেখযোগ্য৷ বাংলায় উর্দুভাষী মুসলিম মাত্র ৬ শতাংশ৷ আর বাংলাভাষী মুসলিমদের মধ্যে এআইএমআইএম-এর তেমন কোনও প্রভাব নেই৷ বাংলাভাষী মুসলিমদের বিজেপি বিরোধী ভোট তাই তৃণমূলের ঘরেই আসবে৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − 9 =