কলকাতা: বিধানসভা অধিবেশন শুরু হওয়ার আগেই থেকে আঁচ ছিল যে সংঘাত লাগছে চলেছে। সেই প্রেক্ষিতেই রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত অবশ্যম্ভাবী ছিল, কারণ তাঁর ভাষণ খসড়া এবং সম্প্রচার বন্ধ করা ইস্যু। সেই মতই বিধানসভা অধিবেশন শুরু মুখেই ব্যাপক শোরগোল। ৪ মিনিতেই ভাষণ শেষ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এদিকে, গোটা বিধানসভা ভরে গেল ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানে। বিজেপি বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে সমস্ত বিজেপি বিধায়করা একজোটে স্লোগান দিতে থাকেন। সংক্ষিপ্ত ভাষণ দিয়েই বেরিয়ে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।
রাজ্যপাল-রাজ্য সরকার সংঘাতে নতুন পর্বের নাম ‘হাওয়ালা জৈন মামলা’৷ মুখ্যমন্ত্রী বোমা ফাটিয়ে হাওয়ালার চার্জশিটে জগদীপ ধনকরের নাম থাকার কথা উল্লেখ করার পরেই তুঙ্গে উঠেছে সংঘাত৷ এই প্রেক্ষপটেই আজ বিধানসভায় এলেন রাজ্যপাল৷ এর আগে রাজভবনের পক্ষ থেকে বিধানসভার সচিবালয়ের কাছে অনুরোধ করা হয়েছিল, বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণ যেন বৈদ্যুতিন মাধ্যমে প্রচার করা হয়৷ কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে এই বছর বৈদ্যুতিন মাধ্যমের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে৷ ফলে এই বছর কোনও ভাবেই রাজ্যপালের ভাষণ সম্প্রচারিত হল না৷ এই নিয়েও ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন রাজ্যপাল, কড়া চিঠি লিখে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি লিখেছিলেন যে, এই ভাবে ভাষণ সম্প্রচার বন্ধ করা জরুরী অবস্থার শামিল! যদিও অবশেষে সেই কড়া চিঠিতে কোনও লাভ হয়নি। ভাষণ সম্প্রচার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ধনকড় লিখেছেন, ‘‘স্পিকার রাজ্যপালের পদের অবমাননা করেছেন৷ বিধানসভায় আমার ভাষণের সম্প্রচার বন্ধ করা জরুরি অবস্থার সামিল৷’’ তিনি আরও লেখেন, ‘‘আপনি প্রকাশ্যে রাজভবনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেছেন, এখানে বিল আচকে রাখা হয়েছে৷ এটা খুবই ‘দুঃখজনক’৷’’
আরও পড়ুন- বাইকে ‘আদি’ নামটা দেখেই বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠেছিল, বিবেকান্দের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ জামবনি
এর পাশাপাশি আবার বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যপাল৷ পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন কোচবিহার৷ সম্প্রতি আবার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে নালিশ ঠুকেছেন বিধানসভার অধ্যাক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়৷ রাজ্যপাল তিন তিনটি বিল আটকে রেখেছেন বলেও অভিযোগ করেন৷ তাতে অবশ্য থেমে থাকেননি রাজ্যপাল৷ বুধবারই পত্রাঘাত করেছিলেন তিনি৷ সব মিলিয়ে আজ যে বিধানসভায় উত্তেজনা হওয়ার ছিল তা সকলের জানা।