কলকাতা: ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর বর্ধমান জেলার খাগড়াগড়ে এক দোতলা বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেই বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় দু’জনের যারা ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন জঙ্গি দলের সদস্য বলে সন্দেহ করে পুলিশ। ওই বাড়িটি থেকে আধুনিক বিস্ফোরক যন্ত্র, আরডিএক্স, ঘড়ির ডায়াল এবং সিম কার্ড উদ্ধার হয়েছিল। এনআইএ (জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা) এই কাণ্ডের তদন্তে নামে এবং একে একে মোট ৩৩ জনকে গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার বিকেলে এনআইএ-র বিশেষ আদালত এদের মধ্যে চার জঙ্গিকে সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে। কলকাতার জেলা ও দায়রা আদালতে গড়া বিশেষ এনআইএর আদালতের বিচারক দণ্ডপ্রাপ্ত সবার পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও পাঁচ মাসের দণ্ড দেয়।
জঙ্গিরা বাংলাদেশে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য বলে জানিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। গতকাল এনআইএর বিশেষ আদালতের বিচারক প্রসেনজিৎ বিশ্বাস এই আদেশ দেন। দোষী সাব্যস্ত হওয়া এই চার জঙ্গি হল মহম্মদ ইউনিস, মতিউর রহমান, জিয়াউল হক ও জহিরুল শেখ।
এর আগে এই মামলায় অভিযুক্ত ৩৪ জঙ্গির মধ্যে দুই নারীসহ ২৬ জন আদালতে দোষ স্বীকার করে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছে। এখন সব মিলিয়ে দোষ স্বীকার করা জঙ্গির সংখ্যা ৩০। গতকাল দণ্ডপ্রাপ্ত চার কারাবন্দি এখন প্রেসিডেন্সি কারাগারে। এখনও বিচারাধীন চারজন জেল হেফাজতে রয়েছে। বাকি একজন পলাতক। এই মামলার তদন্ত সংস্থা এনআইএ ইতিমধ্যে পলাতক এক জঙ্গি বাদে ৩৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে। যে জঙ্গি পলাতক, তার নাম সালাউদ্দিন সালেহান। সালাউদ্দিন জেএমবির আন্তর্জাতিক শাখার প্রধান বলে দাবি কলকাতা পুলিশের।
ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) কর্মকর্তারা বলেছেন, সালাউদ্দিন ধরা পড়লে তাঁর বিরুদ্ধে ‘সম্পূরক চার্জশিট’ দাখিল করে তাঁকে বিচারের সম্মুখীন করা হবে। আত্মসমর্পণ করা জঙ্গিদের মধ্যে চারজন জেএমবির সদস্য। ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান শহরের উপকণ্ঠে খাগড়খড়ের একটি বাড়িতে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে দুই জেএমবি সদস্যের মৃত্যু হয়। এই ঘটনার তদন্তভার নেয় এনআইএ। তারপরই প্রকাশ হয়ে পড়ে ওই বাড়ি ছিল জেএমবির পশ্চিমবঙ্গের ঘাঁটি। ওখানেই তৈরি হত গ্রেনেড ও বোমা। এখানে নিয়মিত আসত জেএমবির জঙ্গিরা।