কলকাতা: একদিনে রাজ্যে ১১ জনের মৃত্যু হল করোনায়৷ এই নিয়ে রাজ্যের মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৩৷ বৃহস্পতিবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে একথা জানালেন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা৷ তিনি জানান, রাজ্যে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৭২৷ গতকাল এই সংখ্যা ছিল ৫৫০৷ গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনা আত্রান্ত হয়েছেন ৩৭ জন৷ অন্যদিকে, করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৩৯ জন৷
মুখ্য সচিব জানিয়েছেন, রাজ্যে টেস্টের সংখ্যা আরও বাড়ানোর চেষ্টা চলছে৷ গত ২৪ ঘণ্টায় ১,৯০৫ জনের রক্তের নমুনা টেস্ট করা হয়েছে৷ যা প্রতি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে ১৮৩ জনের। গতকাল সেই পরিমাণ ছিল ১৬১। অর্থাৎ প্রতিদিনই কোভিড নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে এখনও পর্যন্ত মোট ১৬ হাজার ৫২৫ জনের করোনা টেস্ট করা হয়েছে৷ রাজীব সিনহা আরও জানান, ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যের হাতে ১৪টি টেস্ট ল্যাব আছে৷ তবে রাজারহাটে ল্যাবে প্রযুক্তিগত ক্রুটির কারণে টেস্টিং বন্ধ রাখা হয়েছে৷ ৩ দিন ধরে রাজারহাটের ল্যাবে টেস্ট হচ্ছে না৷ ফলে রাজ্যে এখন ১৩টি ল্যাবে টেস্টিং চলছে৷
এদিকে রাজ্যের ৮০ শতাংশ করোনা আক্রান্তই কলকাতা, হাওড়া এবং উত্তর চব্বিশ পরগণা থেকে এসেছে বলে জানান মুখ্যসচিব৷ হুগলী থেকেও সংক্রমণের খোঁজ মিলছে৷ তবে আটটি জেলা এখনও পর্যন্ত করোনা মুক্ত৷ রাজ্যে মোট ৪৪৪টি কনটেইনমেন্ট জোন আছে বলে জানান মুখ্য সচিব৷ এর মধ্যে কলকাতায় ২৬৪টি, উত্তর চব্বিশ পরগণায় ৭০টি এবং হাওড়ায় ৭২টি কনটেইনমেন্ট জোন আছে৷ তিনি জানান, সরকারের পদক্ষেপ ধীরে ধীরে কার্যকর হচ্ছে৷ গ্রিন জোন মানেই সম্পূর্ণ ছাড় নয়৷ গ্রিন জোনে ছাড় নিয়ে ২ মে নতুন বিধি প্রকাশ করা হবে৷ রাজ্যে এই মুহূর্তে ৫,২৮৮ জন সরকারি কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন এবং ১০,৭৭৩ জন হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছে৷ গতকাল ৮,৯৭২ জনকে হোম কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়া হয়েছে৷
মুখ্যসচিব এ দিন কোভিড মৃত্যুর সংখ্যা প্রসঙ্গে জানান, করোনা উপসর্গে মৃত্যু নিয়ে অডিটের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের বিশেষজ্ঞ কমিটি ১০৫ টি মৃত্যু নিয়ে অডিট করেছেন। তার মধ্যে ৩৩ টি ক্ষেত্রে জানিয়েছেন মৃত্যুর কারণ করোনা। কো-মর্বিডিটিতে মৃত্যু হয়েছে ৭২ জনের৷ মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘করোনা একটি নতুন রোগ৷ এই রোগ কী ভাবে ছড়াচ্ছে, মানব দেহে কী প্রভাব ফেলছে বা রোগটি কী ভাবে চরিত্র পরিবর্তন করছে তা জানার জন্য এই বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করা হয়েছিল।”
It is clarified that no government approval is required for either admitting or treating any patient in any healthcare facility or for testing an individual for COVID19 as per ICMR's testing protocol. No patient can be denied health services for any reason: Govt of West Bengal pic.twitter.com/g3ja0joslI
— ANI (@ANI) April 30, 2020
অডিট করতে গিয়ে সরকার নিযুক্ত বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন আইসিএমআর গাইডলাইন মেনে ডেথ সার্টিফিকেটে একটা সমতা আনতে হবে। ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর তাৎক্ষণিক কারণ, অ্যান্টিসিডেন্স বা সেই ব্যক্তির আরও কী কী রোগ ছিল এবং আন্ডারলাইয়িং কাজ কী, এই তিনটি কারণ উল্লেখ করতে হবে। এ ছাড়াও ওই কমিটি জানিয়েছে, প্রতি রোগীর বেড হেড টিকেটে রোগীর আগের রোগ, চিকিৎসা এবং পরীক্ষা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য মজুত রাখতে হবে। ওই কমিটি প্রতিটি রোগীর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথি সংরক্ষণের উপর জোর দিয়েছে।