কলকাতা: রাজ্যের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুমকি চিঠি দেওয়ার অভিযোগে ধৃত ৩৷ এর মধ্যে রয়েছেন এক চিকিৎসকও৷ এই ঘটনার মাস্টারমাইন্ড আর কেউ নন, কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. অরিন্দম সেন৷ গ্রেফতার করা হয়েছে ওই চিকিৎসকের গাড়ি চালক রমেশ সাই এবং টাইপিস্ট বিজয় কুমার কয়ালকেও৷
আরও পড়ুন- টিকাকরণে গতি আনতে এবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকল্পনা করছে রাজ্য
পুলিশ সূত্রে খবর, আপালনই প্রথম নন৷ এর আগে একাধিক বিশিষ্টজনকে হুমকি চিঠি পাঠিয়েছিলেন ওই চিকিৎসক৷ তিনজনকে লাগাতার জেরা করে গোয়া রহস্যের কিনারা করতে চাইছে পুলিশ৷ প্রসঙ্গত অক্টোবর মাসের শেষে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে একটি হুমকি চিঠি আসে৷ সেখানে লেখা হয়, ‘‘আপনার স্বামীকে খুন করা হবে। কেউ তাঁকে বাঁচাতে পারবে না।” চিঠির প্রেরক হিসাবে রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে কর্মরত দু’জনের নাম উল্লেখ করা হয়৷ কিন্তু তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, এই চিঠিটি এসেছে শরৎ বসু রোড ডাকঘর থেকে৷ চিঠিটি পাঠানো হয়েছে স্পিড পোস্টে৷ হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিকে খুনের চিঠি পাঠানর মতো ঘটনার তদন্তভার সঁপা হয় কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের হাতে৷ তাঁরাই এই কাণ্ডের পর্দা ফাঁস করেন৷
ডা. অরিন্দম সেনের কাণ্ডকারখানা দেখে তাজ্জব দুঁদে অফিসাররাও৷ গত দু’ বছর ধরে সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিকে একের পর এক মকি চিঠি পাঠিয়েছেন ওই চিকিৎসক৷ আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সহ মোট সাত জনকে শরৎ বোস রোডের ওই পোস্ট অফিস থেকে হুমকি চিঠি পাঠানো হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে৷ গত ২৫ অক্টোবর যে সাত জনকে অরিন্দম সেন হুমকি চিঠি পাঠিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও রয়েছেন এনআরএস হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল, ডিরেক্টর মেডিক্যাল এডুকেশন, সায়েন্স সেক্রেটারি, মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপালের মতো বিভিন্ন পদাধিকারীরা৷
কিন্তু কেন এ ভাবে বেনামে হুমকি চিঠি পাঠাতেন ওই চিকিৎসক? এর পিছনে উদ্দেশ্যটাই বা কী? প্রাথমিক তদন্তের পর জানা গিয়েছে, মানসিক সমস্যা থেকেই এমনটা করতেন তিনি৷ সোমবার এই ঘটনার কিনারা করে পুলিশ। রাসবিহারী অ্যাভিনিউ থেকে প্রথমে গ্রেফতার করা হয় টাইপিস্ট বিজয়কুমার কয়ালকে। তাঁকে জেরা করেই গ্রেফতার করা হয় এই ঘটনার মাস্টারমাইন্ড কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক অরিন্দম সেনকে৷ নিজের টাইপিস্টকে দিয়ে হুমকি চিঠিগুলি টাইপ করিয়েছিলেন তিনি। এরপর গাড়িচালকের মাধ্যমে সেই চিঠি পাঠান আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে।