নয়াদিল্লি: বাজেট পেশের আগে আর্থিক সমীক্ষা প্রকাশ করেছে কেন্দ্র৷ সেই সমীক্ষায় দেশের কর্মসংস্থান সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেশ করেছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক৷
আর্থিক সমীক্ষায় জানানো হয়েছে, নতুন কর্মসংস্থানের সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে প্রায় ২ কোটি ৬২ লক্ষ৷ এর মধ্যে গ্রামীণ এলাকায় ১ কোটি ২১ লক্ষ ও শহর এলাকায় ১ কোটি ৩৯ লক্ষ৷ অর্থনীতিতে নিয়মমাফিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার ২০১১-১২ সালে ছিল ৮ শতাংশ৷ তা ২০১৭-১৮’য় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯.৯৮ শতাংশ৷ গ্রামীণ এলাকায় মহিলা শ্রমিকদের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় ভারতের শ্রম বাজারে লিঙ্গ বৈষম্য বেড়েছে৷উৎপাদনশীল বয়স ১৫ থেকে ৫৯ বয়স্ক মানুষের ৬০ শতাংশই গৃহকর্মে পুরোপুরি নিয়োজিত৷
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক জানিয়েছে, গত ছয় বছরে সংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বেড়েছে৷ যদিও ২০১৪ সাল থেকে মোদি সরকারকে অস্বস্তি বাড়িয়েছে দেশে লাফিয়ে বাড়তে থাকা বেকারত্ব সমস্যা৷ বিরোধীদের অভিযোগ, মোদির আমলে নতুন কাজের সুযোগ না বাড়লেও কর্মহীন হয়েছে কয়েক লক্ষ মানুষ৷ বিরোধীদের এই অভিযোগের আবহে আজ সংসদে অর্থনীতির পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে কেন্দ্র নরেন্দ্র মোদি সরকার৷
আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্টে কেন্দ্রের তরফে সাফ উল্লেখ করা হয়েছে, ছয় বছরে সংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বেড়েছে ৫ শতাংশ৷ সমীক্ষা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, সংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান ২০১১-১২ সালের কর্মসংস্থান হয়েছে ১৮%৷ ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে কর্মসংস্থান বেড়েছে ২৩ শতাংশ৷ কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি সরকারের এই রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীদের একাংশ৷
কেন্দ্রের আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ছয় বছরের সংঘটিত ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের হার বেড়েছে ৫ শতাংশ৷ অথচ গত বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে এনএসএসও’র রিপোর্টে বলছে, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে দেশে বেকারত্বের হার ৩.১ শতাংশ দাঁড়িয়েছে৷ যা বিগত ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ৷ ২০১৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর মোদি সরকার এই রিপোর্ট মেনে নেয়৷
সম্প্রতি অধ্যাপক মেহরোত্র পরিবারের গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে মিলিয়ে ৬ বছরে ভারতে প্রায় ৯০ লক্ষ চাকরি কমেছে৷ জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিমাংশুর গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, ২০১১-১২ অর্থবর্ষে থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে মিলিয়ে ভারতে ফি বছরে গড়ে ২৬ লক্ষ মানুষ চাকরি খুইয়েছেন৷ সিএমআইই সমীক্ষা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০১৯ সালে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বেকারত্বের হার বেড়ে ৭.৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷ ২০১৭ সালে মে ও আগস্টের পর বেকারত্বের হার ধাপে ধাপে ৭ বার বেড়েছে৷ কিন্তু সাম্প্রতিককালে প্রকাশিত বেকারত্বের রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার পরও কেন্দ্রের আর্থিক সমীক্ষা-রিপোর্ট ঘিরে নতুন করে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷