আর কতবার আদালতে মুখ পুড়বে রাজ্যের? গুণতে তো ক্যালকুলেটর লাগবে!

কলকাতা: গত কয়েক বছর ধরে একই চিত্রনাট্য দেখছে রাজ্যবাসী। বিরোধীদের বহু কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে অনুমতি দেয়নি পুলিশ। বিশেষ করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর একের পর এক…

কলকাতা: গত কয়েক বছর ধরে একই চিত্রনাট্য দেখছে রাজ্যবাসী। বিরোধীদের বহু কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে অনুমতি দেয়নি পুলিশ। বিশেষ করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর একের পর এক কর্মসূচিতে সরাসরি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। সেই সমস্ত ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্টে গিয়ে কর্মসূচি পালন করতে পেরেছিলেন বিরোধী দলনেতা। অর্থাৎ বহুবার আদালতে মুখ পুড়েছে রাজ্যে। ফের সেই একই ঘটনা দেখা গেল। ‌কখনও বিরোধীদের মিছিল করার অনুমতি না দেওয়া, বা অবস্থান বিক্ষোভের অনুমতি না দেওয়ার অভিযোগ উঠছে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এমনকী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজ্য গ্রেফতার করছে প্রতিবাদীদের, এই অভিযোগও আজ নতুন কিছু নয়। সেই সূত্রে শুক্রবার ফের কলকাতা হাইকোর্টে ধাক্কা খেল রাজ্য। গত মঙ্গলবার ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর ডাকে যে নবান্ন অভিযান হয়েছিল সেখানে তীব্র বিশৃঙ্খলা হওয়ায় পুলিশ গ্রেফতার করে অন্যতম আয়োজক তথা ছাত্রনেতা সায়ন লাহিড়ীকে। যথারীতি বিষয়টি গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, শনিবার দুপুর দুটোর মধ্যে ছেড়ে দিতে হবে সায়নকে। শুধু তাই নয়, অন্য মামলা থাকলে তাতেও গ্রেফতার করা যাবে না সায়নকে। রাজ্যের আইনজীবী এর বিরোধিতা করলেও তা ধোপে টেকেনি।

আরজিকর কাণ্ডের জেরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি একের পর এক কর্মসূচিতে নামছে। কিন্তু অদ্ভুতভাবে কংগ্রেস যে মিছিলের ডাক দিয়েছিল বৃহস্পতিবার, তাতে অনুমতি দেয়নি পুলিশ। ‌ অথচ সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট নির্দেশে জানিয়ে দিয়েছে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বাধা দিতে পারবে না পুলিশ। এরপর কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। হাইকোর্ট মিছিলের অনুমতি দেয়। এরপর বৃহস্পতিবার বিশাল মিছিল করে কংগ্রেস। একই ভাবে কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য বিজেপিকে ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে অবস্থান বিক্ষোভের অনুমতি দেয়। উল্লেখ্য বিজেপির ওই কর্মসূচিতেও পুলিশ অনুমতি দেয়নি। সবমিলিয়ে দেখা যাচ্ছে রাজ্য প্রশাসন সবকিছুতেই ‘না’ বলতে প্রস্তুত রয়েছে। এত বেশি সংখ্যক কর্মসূচিতে রাজ্য বাধা দিচ্ছে যা গুণতে যেন ক্যালকুলেটর লাগবে। কিন্তু মামলা যেই হাইকোর্টে গড়াচ্ছে সেখানে ধাক্কা খাচ্ছে রাজ্য।‌ এতে যে রাজ্য প্রশাসনের ‘ফেসলস’ হচ্ছে সেটা তারা বুঝতে পারছে না? নাকি বুঝতে চাইছে না? যেভাবে বিরোধীদের আদালতের দ্বারস্থ হয়ে একের পর এক কর্মসূচি করতে হচ্ছে, তা কিন্তু রাজ্য প্রশাসনের পক্ষে একেবারেই ভাল বিজ্ঞাপন নয়। এতে যে শাসক দলের রাজনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।