নয়াদিল্লি: চড়া এলপিজি সিলিন্ডারের দামে গা পুড়ছে আমজনতার। একধাক্কায় ১৪৪.৫০ টাকা বেড়েছে গ্যাসের দাম। 'ইন্ডিয়ান অয়েল' এর মতে, মুম্বাইয়ে একটি ১৪.২ কেজি সিলিন্ডারের দাম পড়বে ৮৫৮.৫০ টাকা। কলকাতা ও চেন্নাইতে এই দাম বেড়েছে যথাক্রমে ১৪৯ টাকা ও ১৪৭ টাকা করে। এলপিজি সিলিন্ডারের জন্য টাকা না খরচ করে আপনি এবার একটি বিকল্প পন্থার সাহায্য নিতে পারেন। এই উপায় যেমন সস্তা, সেরকমই পরিবেশবান্ধব। জানতে চান কীসের কথা বলা হচ্ছে? বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট এর কথা!
জৈব বর্জ্য পদার্থ থেকে তৈরি এই গ্যাসে থাকে অক্সিজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং মিথেন। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তরফ থেকে 'পপলি ওয়েস্ট ম্যানেজার' সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা হর্ষবর্ধন এরার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। সেখানেই তিনি এলপিজি ও বায়োগ্যাসের মধ্যে পার্থক্য বিশদে বিবৃত করেন। এই সংস্থাটি একটি ম্যানেজমেন্ট সলিউশন কম্পানি। হর্ষবর্ধন জানান, এলপিজি থেকে বুটেন গ্যাস বের হয় তা বাতাসের থেকে ভারী তাই এই গ্যাস থেকে বিস্ফোরণ হওয়ার প্রভূত সম্ভাবনা আছে। অন্যদিকে জৈব বর্জ্য পদার্থ থেকে যে মিথেন গ্যাস বের হয় তা বাতাসে থেকে অনেক হালকা তাই এখানে বিস্ফোরণ হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। এমনকি এই মিথেন গ্যাস বাতাসের ওজোন স্তর বাড়াতেও সাহায্য করে।
বায়ো-গ্যাস উৎপন্ন করতে বায়ো-ডাইজেস্টারের প্রয়োজন হয়। চারজন সদস্যের একটি পরিবারে রান্না করতে যে পরিমাণ বায়োগ্যাস লাগে তা সাধারণত আসে কমপক্ষে পাঁচ কিলোগ্রাম বর্জ্য পদার্থ থেকে। সেইজন্যে হর্ষবর্ধন একটি কমিউনিটি প্ল্যান্ট স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি আরো জানান যদি একটি কমিউনিটি তে পাঁচশো টি বাড়ি থাকে আর প্রতিটি বাড়ি থেকে প্রতিদিন যদি পাঁচশো গ্রাম করে বর্জ্য পদার্থ পাওয়া যায় তাহলে বিষয়টি অনেক সহজতর হয়। একটি কমিউনিটি বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরি করতে মোটামুটি ২৫ লাখ টাকা পড়ে, আর একবার বিনিয়োগ করার তিন বছরের মধ্যেই বিনিয়োগকারীরা লাভবান হতে পারেন।
উপাদান ও বহন ক্ষমতা অনুযায়ী একটি বায়ো ডাইজেস্টারের দাম ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আপনি যদি বেশি ফল পেতে চান তবে পোর্টেবল বায়ো ডাইজেস্টার এর জন্য বিনিয়োগ করার পরামর্শ দিয়েছেন হর্ষবর্ধন।
কীভাবে কাজ করে বায়োগ্যাস প্লান্ট?
ডাইজেস্টার ট্যাংক: এখানে বর্জ্য পদার্থ গুলি জমা করা হয় এবং মাইক্রো অর্গানিজম এর মাধ্যমে পদার্থ গুলিকে ভাঙ্গা হয় যেখান থেকে মিথেন গ্যাস বের হয়।
গ্যাস কালেক্টর: যে গ্যাস উৎপন্ন হয় তা এই ট্যাঙ্কে জমা করা হয়।
আউটলেট: তাই জলীয় যে অবশিষ্ট পড়ে থাকে তাই এই আউটলেট পাইপের মাধ্যমে বাইরে নিষ্কাশন করা হয় এবং দ্রবীভূত অবস্থায় গাছের সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
পাইপলাইন: এই পাইপলাইনের মাধ্যমে বায়োগ্যাসকে রান্না ঘরে পৌঁছে দেওয়া হয়।
একবার বায়োগ্যাস তৈরি হতে সাধারণত ২৪ ঘন্টা লাগে এবং বর্জ্য পদার্থ কে ভাঙ্গা, ভাঙ্গা বর্জ্য পদার্থ কে বায়ো ডাইজেস্টারে ফেলা ইত্যাদি সম্পন্ন করতে দুই ঘন্টা সময় লাগে। আরো বিশদে জানার জন্য পিপল ওয়েস্ট ম্যানেজারসের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটটি দেখতে পারেন।