কলকাতা: ইরান ইজরায়েলের ওপর হামলা করলে এর ফলাফল গোটা বিশ্বের জন্য কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে? মধ্যপ্রাচ্যে জুড়ে আনঅফিসিয়ালি যেন হাই অ্যালার্ট জারি৷ আমেরিকা প্রতিটা সেকেন্ডের খবর রাখছে৷ আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এর মধ্যে এমন একটা স্টেপ নিয়ছে সেটাই যেন মধ্যপ্রাচ্যে আরো বড় আকারের যুদ্ধের আশঙ্কা সৃষ্টি করছে৷ শুক্রবার পেন্টাগনের তরফে জানানো হয়, হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ার হত্যার পরে ইরান প্রকাশ্যে ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা করছে৷ তাই আমেরিকা আগের মতই ইজরায়েলের পাশে থেকে সেনা, অতিরিক্ত যুদ্ধজাহাজ এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই অঞ্চলে৷ কিন্তু প্রশ্ন উঠছে ইরান ইজরায়েলের ওপর হামলা করলে সেটা কতটা মারাত্মক হতে পারে? রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতই বিশ্বে কি আরও একটা ক্রাইসিস শুরু হতে পারে?
ঠিক কী ঘটেছিল যে নতুন করে এই যুদ্ধ পরিস্থিতি শুরু হল সেটা আগে জানাব আপনাদের? ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েশকিয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মঙ্গলবার সে দেশের রাজধানী তেহরানে হাজির ছিলেন স্বাধীনতাপন্থী প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের প্রধান হানিয়া। সে রাতেই একটি সরকারি অতিথিশালায় তাঁকে ইজ়রায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ খুন করে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশের। হানিয়ার খুনের বদলা নিতে ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে ‘সরাসরি সামরিক প্রত্যাঘাতে’র নির্দেশ দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আমি খোমেইনি স্বয়ং। তাঁর ওই ‘বার্তা’ পেয়েই বুধবার রাতে বৈঠক করেছে ইরানের জাতীয় সামরিক পরিষদ। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে পশ্চিম এশিয়ায়।
এর ঠিক পরই যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে বাড়তি যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান পাঠাবে বলে জানিয়ে দিয়েছে পেন্টাগন। মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও তাদের সহযোগী হামাস ও হিজবুল্লাহ থেকে হুমকির পর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুধু তাই নয় মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপে মার্কিন নৌবাহিনীর অতিরিক্ত ক্রুজার এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রে গুলি করতে পারা ডেস্ট্রয়ার পাঠানো অনুমোদন করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিমানের একটি অতিরিক্ত স্কোয়াড্রনও পাঠাচ্ছে পেন্টাগন।
পেন্টাগন আরো জানায়, স্থলভিত্তিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আরো বেশি সংখ্যায় মোতায়েন করা হবে। এর মানে বোঝা যাচ্ছে ইরান একটা হামলা করলেই ইজরায়েল যাতে পাল্টা ১০টা হামলা করার ক্ষমতা রাখতে পারে সেই জন্য পুরো সাপোর্ট আমেরিকা আগে থেকেই দিয়ে রেখেছে৷ এদিকে এই যুদ্ধের আশঙ্কা এতটাই জোরালো যে ইজ়রায়েল এবং ইরানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার আবহে বিমানযাত্রীদের নিয়াপত্তা নিয়ে শঙ্কিত এয়ার ইন্ডিয়া। রতন টাটার বিমান সংস্থা এই পরিস্থিতিতে আগামী ৮ অগস্ট পর্যন্ত দিল্লি থেকে ইজ়রায়েলের রাজধানী তেল আভিভের সমস্ত উড়ান স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করছে। এবার দেখার ইরান সত্যিই ইজরায়েলর ওপর হামলা করে নাকি আমেরিকার ভয়ে পিছিয়ে যায়৷