joynagarer moya
নিজস্ব প্রতিনিধি: জয়নগরের মোয়া যাতে বেশি দিন সতেজ থাকে, নষ্ট না হয়ে যায় সেই লক্ষ্যে বিশেষ গবেষণা চালাচ্ছেন গবেষকরা। যে গবেষণার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন মোয়া ব্যবসায়ীরা। শীতকালের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ জয়নগরের মোয়া। জয়নগরের মোয়া পছন্দ করেন না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। কনকচুড় খই, খেজুর গাছের রস থেকে তৈরি নলেন গুড়, সঙ্গে ক্ষীর, এলাচ ইত্যাদির মিশেল ও কারিগরদের হাতের জাদুতে জয়নগরের মোয়া বছরের পর বছর খাদ্য রসিকদের রসনা তৃপ্তি করে আসছে। কিন্তু রেফ্রিজারেটরে না রাখলে জয়নগরের মোয়া তৈরির পর দিন সাতেকের বেশি ঠিক থাকে না। এতে অসুবিধা হয় ব্যবসায়ীদের।
এবার এই অসুবিধা দূর করতে গবেষকরা চেষ্টা চালাচ্ছেন। জানা গিয়েছে কোনও রাসায়নিক ব্যবহার না করে প্যাকেজিং ব্যবস্থায় বিশেষ পরিবর্তন এনে জয়নগরের মোয়া যাতে সতেজ ও গুণগত মানে একই থাকে সেই লক্ষ্যে গবেষকরা কাজ করছেন। প্যাকেজিংয়ের সময় জয়নগরের মোয়াতে যাতে বেশি হাত না লাগে, কোয়ালিটি কন্ট্রোল যথাযথ মানের থাকে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে গবেষণা চলছে। গবেষকরা মনে করছেন এর ফলে আগামী দিনে জয়নগরের মোয়া ছয় মাস পর্যন্ত নষ্ট হবে না।
একমাত্র শীতকালেই খেজুর গাছের রস থেকে নলেন গুড় তৈরি করা যায়। মূলত নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত খেজুর গাছের রস ঠিকঠাক পাওয়া যায়। আর এই সময় ধরেই জয়নগরের মোয়া তৈরির কর্মকাণ্ড চলে। অর্থাৎ এটা মাত্র তিন মাসের ব্যবসা। জয়নগর স্টেশনের পাশের দোকান যা বুচকিবাবুর দোকান বলে পরিচিত সেখানেই এই মোয়া প্রথম তৈরি হয়েছিল বলে এলাকাবাসীর দাবি। পরবর্তী প্রজন্ম সেই ব্যবসাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। তবে অনেকেরই আবার দাবি জয়নগরের আগের স্টেশন ‘বহুড়ু’ অঞ্চলেই প্রথম মোয়া তৈরি হয়েছিল। তবে এর উৎপত্তি নিয়ে ভিন্ন মত থাকলেও ব্যবসায়ীরা মনে করছেন যদি প্যাকেজিংয়ের পর জয়নগরের মোয়া ছয় মাস পর্যন্ত ঠিক থাকে তাহলে দেশ বা বিদেশ জুড়ে ব্যবসা আরও বাড়বে তাঁদের।
এতে রাজস্ব বাড়বে রাজ্যেরও। সেই সঙ্গে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে বলেও মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। উল্লেখ্য ২০১৫ সালে জয়নগরের মোয়া ‘জিআই ট্যাগ’ পেয়েছে। তাই এই মোয়ার কদর দেশ তথা বিশ্বজুড়ে আরও বাড়তে পারে যদি সেটি দীর্ঘদিন প্যাকেটবন্দি অবস্থায় ঠিকঠাক থাকে। আর সেই লক্ষ্যই চলছে গবেষণা। সূত্রের খবর, যেভাবে গবেষণা চলছে তার প্রাথমিক ফল দেখে সকলেই আশাবাদী যে শীঘ্রই ভাল খবর মিলবে। আর ভাল কিছুর জন্য অপেক্ষা করছেন মোয়া ব্যাবসায়ীরাও। সব মিলিয়ে গবেষকরা মোয়াশিল্পে নিঃসন্দেহে নতুন দিশা দেখাতে চলেছেন।