high court
কলকাতা: কলকাতা হাই কোর্টে দুই বিচারপতির নজিরবিহীন সংঘাত! এজলাসে বসে বিচারপতি সেনের বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ঠতা’র অভিযোগ আনলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। দুই বিচারপতির এহেন সংঘাতে শোরগোল হাই কোর্টে।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে মেডিক্যাল কলেজ দুর্নীতি মামলায় এফআইআর দায়ের করেছিল সিবিআই। বৃহস্পতিবার সেই এফআইআর খারিজ করে দেয় কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের নির্দেশ, সিবিআই যেন আদালত থেকে এই মামলার সূত্রে নেওয়া সমস্ত জিনিস অবিলম্বে ফেরত দিয়ে দেয়৷
দুই বিচারপতির সংঘাতের শুরু মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি সংক্রান্ত দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে৷ বুধবার থেকেই শুরু হয়েছে সিঙ্গেল বেঞ্চ আর ডিভিশন বেঞ্চের টানাপড়েন৷ এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বলেছিলেন, ‘‘রাজ্য পুলিশের উপর আদালতের আস্থা নেই। তারা এখনও শাহজাহান শেখকেই ধরতে পারেনি। রাজ্যে ক্রমেই কিছু দুর্নীতিগ্রস্তের আখড়া হয়ে উঠছে, এর পরেও পুলিশের কোনও সদর্থক ভূমিকা নেই। তাই আদালত এই মামলার তদন্তভার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে দেওয়া যথাযথ মনে করছে।’’এর পর রাজ্যের আবেদনে সাড়া দিয়ে বিচারপতির গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্থগিতাদেশ বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ৷ পাশাপাশি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআই-কে যে এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেই নির্দেশও খারিজ করে দেয় বিচারপতি সেন এবং বিচারপতি উদয়কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। বৃহস্পতিবার সকালে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বিচারপতি সেনের বিরুদ্ধে পাল্টা নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক স্বার্থ জড়িত থাকা’ ব্যক্তির মতো আচরণ করছেন বিচারপতি সেন। তিনি ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য’ নিয়ে কাজ করছেন। এর পরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন, ‘‘বিচারপতি সেনের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে না কেন?’’
বৃহস্পতিবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মেডিক্যাল মামলাটি উঠলে তিনি বিচারপতি সেনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন৷ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, বড়দিনের ছুটির আগে বিচারপতি অমৃতা সিনহাকে নিজের চেম্বারে ডেকে পাঠিয়েছিলেন বিচারপতি৷ সেন। সেখানে বিচারপতি সিনহাকে রাজনৈতিক নেতার মতো নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কী কথা বলেছিলেন? সে কথাও ফাঁস করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, ‘‘বিচারপতি সেন বিচারপতি সিনহাকে বলেছিলেন , অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটা রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ আছে। তাঁকে বিরক্ত করবেন না। দ্বিতীয়ত, বিচারপতির অমৃতা সিনহার এজলাসে শুনানির লাইভ স্ট্রিমিং বন্ধ করতে হবে। এবং তৃতীয়ত, প্রাথমিকের দু’টি মামলাও খারিজ করতে হবে’’