কেন এত গুরুত্বপূর্ণ মোদির এই রাশিয়া সফর? জল মাপছে আমেরিকা!

নিজস্ব প্রতিনিধি: দু’দিনের (সোম ও মঙ্গলবার) রাশিয়া সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগেও রাশিয়ায় গিয়েছেন তিনি। কিন্তু মোদির এই রাশিয়া সফর ও সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির…

WhatsApp Image 2024 07 08 at 3.27.14 PM

নিজস্ব প্রতিনিধি: দু’দিনের (সোম ও মঙ্গলবার) রাশিয়া সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগেও রাশিয়ায় গিয়েছেন তিনি। কিন্তু মোদির এই রাশিয়া সফর ও সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের অসম্ভব রাজনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম মস্কো গেলেন মোদি। মোদির রাশিয়া সফরের উপর আমেরিকার বিশেষ নজর রয়েছে। বলা ভাল বিষয়টি নিয়ে জল মাপছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই সফরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি, ইউক্রেন যুদ্ধের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা সমঝোতার ক্ষেত্রের মতো বিষয়গুলি নিয়ে মোদির সঙ্গে পুতিনের আলোচনা হবে বলে খবর। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই আমেরিকা, ব্রিটেন, জাপান-সহ বহু দেশ রাশিয়াকে তীব্র আক্রমণ করতে শুরু করে। বহু বিষয় নিয়ে আমেরিকার উপর তারা নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও সেই চোখরাঙানি উপেক্ষা করে রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে ভারত এবং কয়লা ও তেল আমদানি করে চলেছে নয়াদিল্লি। সবচেয়ে বড় কথা ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জে কোনও কথাই বলেনি ভারত।

যে ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আমেরিকা। কিন্তু ভারত সেই বিষয়টিকে ডোন্ট কেয়ার করেছে। আগামী নভেম্বরে আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। যে নির্বাচনে একেবারেই স্বস্তিতে নেই বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সম্প্রতি ‘প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেট’ অনুষ্ঠানে নিজের দল তথা সমর্থকদের হতাশ করেছেন বাইডেন। সেই বিতর্ক সভায় বাইডেনকে মাত করে দিয়েছেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই পরিস্থিতিতে মোদির রাশিয়া শহরের দিকে সতর্ক নজর রাখছে বাইডেন প্রশাসন।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরেই রাশিয়া ইস্যুতে ভারতকে চাপে রাখার চেষ্টা করে আমেরিকা। ভারত যেভাবে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে তা নিয়ে বহুবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাইডেন। কিন্তু তাতে নয়াদিল্লি একবারের জন্যও ব্যাক ফুটে যায়নি। উল্টে ফ্রন্ট ফুটে খেলে সপাটে ব্যাট চালিয়েছে ভারত। বাণিজ্যিক সম্পর্ক বন্ধ করা তো দূরের কথা, আরও বেশি করে রাশিয়া থেকে তেল কিনতে শুরু করে নয়াদিল্লি। শুধু তেল আমদানি করাই নয়, সম্প্রতি রাশিয়া থেকে ট্রেন ও জাহাজ পথে ভারতে কয়লাও এসেছে।

এই পরিস্থিতিতে নরেন্দ্র মোদির রাশিয়া সফরের পর দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্ক আরও মসৃণ হবে বলে আন্তর্জাতিক মহল মনে করছে। কিন্তু তারপরেও আমেরিকা শুধু ক্ষোভ প্রকাশ ছাড়া আর কিছুই করতে পারবে না। কারণ ভারতের বিশাল জনসংখ্যা ও বিরাট বাজারকে শুধু আমেরিকা কেন, বিশ্বের কোনও দেশই উপেক্ষা করতে পারবে না। দিন দিন ভারতীয় অর্থনীতির ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত। বিশ্বের এমন কোনও দেশ নেই যারা ভারতকে সমীহ করে না। তাই ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নরেন্দ্র মোদির রাশিয়া সফল সব দিক দিয়ে যে তাৎপর্যপূর্ণ, সেটা স্পষ্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *