high command
নিজস্ব প্রতিনিধি: শুধু সম্প্রতিক সময়কাল বলে নয়, বছরের পর বছর ধরে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কঠোর সমালোচক বলে পরিচিত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। পশ্চিমবঙ্গে কোনও ভাবেই যে তৃণমূলের সঙ্গে জোট তিনি মেনে নেবেন না, সে কথা বহুবার বলেছেন অধীর। এই প্রেক্ষাপটে মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গে তিনি একাই লড়বেন। এরপরই মমতার মানভঞ্জন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন কংগ্রেস হাইকমান্ড। রাহুল গান্ধী, জয়রাম রমেশরা বার বার জোট বার্তা দিচ্ছেন। কিন্তু আদৌ কি কংগ্রেস হাইকমান্ড পশ্চিমবঙ্গে জোট নিয়ে আন্তরিক? উত্তরটা সম্ভবত না। যদি সেটাই হতো তাহলে মমতার কড়া সমালোচক অধীরকে কবেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিত হাইকমান্ড। কিন্তু একনাগাড়ে মমতার বিরোধিতা করে যাওয়ার পরেও অধীরকে তাঁর পদ থেকে সরানো হয়নি। এতেই উত্তরটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
তবে প্রশ্ন উঠছে তাহলে পশ্চিমবঙ্গে জোট নিয়ে কেন হাইকমান্ড পজিটিভ বার্তা দিচ্ছেন? কারণ একটাই, দেশজুড়ে বিভিন্ন অ-বিজেপি দলকে বিশেষ বার্তা দেওয়ার জন্যই কংগ্রেসের এই প্রচেষ্টা। যাতে কেউ না বলতে পারে যে কংগ্রেস জোট ধর্ম ভেঙেছে। অর্থাৎ কোনও রাজ্যে জোট ভেঙে গেলে তার দায় কংগ্রেস কোনও ভাবেই নেবে না। শুধুমাত্র সেই কারণেই পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে কংগ্রেস হাইকমান্ড সদর্থক কথা বলছেন। সেই সূত্রে পশ্চিমবঙ্গে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ প্রবেশ করার পরেও তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেননি। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেসকে এই বার্তাও রাহুল দিয়েছেন যে, একই গাড়িতে পাশাপাশি বসে তিনি অধীরের সঙ্গে যাত্রা করছেন। একই যাত্রায় যখন রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্ব তৃণমূলকে আক্রমণ করছেন, তখন কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী ও জয়রাম রমেশ তৃণমূল সম্পর্কে পজিটিভ কথা বলছেন। নিঃসন্দেহে এটি কংগ্রেসের একটি কৌশলী চাল। কারণ কংগ্রেস হাইকমান্ড ভাল করেই জানেন যে, অধীর চৌধুরীকে প্রদেশ সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিলে পশ্চিমবঙ্গে এখনও পর্যন্ত কংগ্রেসের যে সংগঠন রয়েছে তা ভেঙে আরও চুরমার হয়ে যাবে। তখন বাংলায় কংগ্রেসের অস্তিত্ব বলে আর কিছু থাকবে না। শুধুমাত্র সেই কারণেই অধীরকে পদ থেকে সরানো হয়নি। আর সেটা বুঝতে পেরেই তৃণমূল বারবার কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না। শেষপর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে জোট হয় কিনা সেটাই দেখার।