congress
নিজস্ব প্রতিনিধি: বহুদিন আগেই বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোট নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। মাসের পর মাস কেটে গিয়েছে, কিন্তু আসন সমঝোতার কাজ কার্যত এতটুকু এগোয়নি। এই পরিস্থিতিতে সদ্য জোট ছেড়ে বেরিয়ে এনডিএ শিবিরে ফিরে গিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। এছাড়া কোনও জোট হচ্ছে না পশ্চিমবঙ্গ এবং পাঞ্জাবে। এই টালমাটাল পরিস্থিতির জন্য মূলত কংগ্রেসকেই দায়ী করছে আঞ্চলিক দলগুলি। জেডি ইউ নেতা কেসি ত্যাগী স্পষ্ট বলেছেন জোটে কংগ্রেসের দাদাগিরি সহ্য করা যাচ্ছিল না বলেই বাধ্য হয়ে তাঁরা ‘ইন্ডিয়া’ জোট ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে এ প্রসঙ্গে কে সি ত্যাগী বলেছেন, “একটি বিশেষ লক্ষ্য নিয়ে আমরা ‘ইন্ডিয়া’ জোট গঠন করেছিলাম। কিন্তু সেখানে কংগ্রেসের আচরণ একেবারেই ঠিক ছিল না। আমাদের অভিজ্ঞতা বলছে কংগ্রেস আঞ্চলিক দলগুলিকে দুর্বল করার চেষ্টা করছিল। তৃণমূল, ডিএমকে’র পাশাপাশি আমাদের দলের সঙ্গেও একই আচরণ করছিল ওরা। এমনকী একটা সময় রাহুল গান্ধী তো বলেই বসলেন আঞ্চলিক দলগুলির নাকি কোনও ইডিওলজি নেই। এরপরেও কি ওই জোটে থাকা সম্ভব ছিল?” সরাসরি একথা না বললেও কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে বহুদিন ধরেই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছে তৃণমূল ও সমাজবাদী পার্টি। অন্যদিকে বামেরাও বুঝতে পারছে না কংগ্রেস ঠিক কী চাইছে। সবমিলিয়ে কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে আরও বেশি করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নীতিশ জোট ছাড়ার পরেই।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এমন ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের ভুল দেরিতে হলেও শুধরোতে পারবে হাত শিবির? নাকি যেমন চলছিল তেমনটাই চলবে? ১ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ হওয়ার পর ৯ তারিখ, অর্থাৎ আট দিন ধরে চলবে বাজেট অধিবেশন। এরপরই পুরোপুরি লোকসভা ভোটের দামামা বেজে যাবে। কারণ এরপর আর সংসদের কোনও অধিবেশন বসবে না। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল ব্যস্ত হয়ে পড়বে নির্বাচন নিয়ে। সেই জায়গা থেকে বিরোধীরা যখন বিজেপিকে হটানোর জন্য মহাজোট গঠন করেছিল, তা নির্বাচন ঘোষণার আগেই ক্ষয়িষ্ণু শুরু হতে শুরু করেছে। বলাবাহুল্য জোটের বড় শরিক হিসেবে কংগ্রেসের উচিত ছিল যেভাবেই হোক সবাইকে ধরে রাখার চেষ্টা করা। কিন্তু সে কাজে তারা অনেকটাই ব্যর্থ হয়েছে। তাই জোট যেভাবে ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে তার দায় অবশ্যই নিতে হবে কংগ্রেসকে। জানা গিয়েছে বিহার এবং ঝাড়খণ্ডেও আসন ভাগাভাগি নিয়ে আরজেডি এবং জেএমএম দলের সঙ্গে মসৃণ ভাবে কাজ এগোতে পারছে না কংগ্রেস। নিজেদের শক্তির তুলনায় বেশি আসন চাইছে কংগ্রেস, এমনটাই খবর। বাস্তব পরিস্থিতি বলছে বিরোধীদের হাতে আর সময় নেই। তাই কংগ্রেস এখনও নমনীয় হলে অনেক কিছুই করা সম্ভব, এমনটাই বলছে আঞ্চলিক দলগুলি। তবে সেই যুক্তি কংগ্রেস কতটা মানে এখন সেটাই দেখার।