নিজস্ব প্রতিনিধি: বিগত এক সপ্তাহের মধ্যে পরপর এমন ঘটনা ঘটেছে যা তৃণমূলকে অসম্ভব টেনশনে ফেলে দিয়েছে। অন্যদিকে এই ঘটনাপ্রবাহের জেরে ভোটবাক্সে বিজেপির ফল ভাল হতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। ঘটনা হল সাধু সন্ন্যাসীদের একাংশ সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে মন্তব্য করেছেন সেটিকে ইস্যু করে হিন্দু ভাবাবেগকে আরও উচ্চগ্রামে নিয়ে গিয়ে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে বাকি থাকা ১৭টি লোকসভা আসনে চমকপ্রদ ফল করতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে।
এর মধ্যেই সামনে চলে এল নন্দীগ্রামে খুনের ঘটনা। যেভাবে এক মহিলা বিজেপি কর্মীকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্রের কোপে খুন করা হয়েছে, তা নিয়ে শুধু নন্দীগ্রাম বা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নয়, গোটা রাজ্য জুড়েই তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
সবচেয়ে বড় কথা নিহত বিজেপি মহিলা কর্মী রথীবালা আড়ি তফসিলি সম্প্রদায়ের। যে ঘটনায় বাংলার তফসিলি সমাজের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম নিয়েছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে, এমনটাই একাধিক সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে। যা কিনা তৃণমূলের পক্ষে একেবারেই ভাল খবর নয়।
আগামী ষষ্ঠ ও সপ্তম দফা মিলিয়ে বাংলায় ১৭টি লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচন হবে। যার অনেক কটিতে তৃণমূল তুলনামূলকভাবে বিজেপির থেকে এগিয়েছিল বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। কিন্তু সাধু-সন্ন্যাসীদের একাংশ সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যের পাশাপাশি নন্দীগ্রামে মহিলা বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় পরিস্থিতি কিছুটা হলেও বদলে গিয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের অনুমান।
ইতিমধ্যেই এই ইস্যুতে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করতে শুরু করেছে বিজেপি। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সাধু সন্ন্যাসীদের একাংশ সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যে প্রচারে এসে তৃণমূলকে আক্রমণ শানাতে শুরু করে দিয়েছেন।
এই আবহের মধ্যেই খুন হয়ে গেলেন নন্দীগ্রামের এক মহিলা বিজেপি কর্মী। উল্লেখ্য গত বিধানসভা নির্বাচনে মহিলাদের বড় অংশ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছিলেন। তৃণমূল বারবার মহিলাদের ক্ষমতায়নের কথা বলে।
‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য তৃণমূল কি কি প্রকল্প এনেছে, তা বারবার প্রচারে তুলে ধরতে দেখা যায় শাসক দলের নেতা-নেত্রীদের। সেই জায়গায় কেন এক মহিলা রাজনৈতিক কর্মী খুন হয়ে যাবেন, সেই প্রশ্ন উঠছেই। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি প্রবল অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে তৃণমূলকে। তাই এই দুটি বিষয় ভোটবাক্সে কতটা প্রভাব ফেলে তা সময়ই বলবে।