caa
নিজস্ব প্রতিনিধি: আর কতদিন সিএএ কার্যকর হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে মতুয়াদের? অথচ রোজই যেন শোনা যাচ্ছে যে এবার লাগু হয়ে যাবে সিএএ অর্থাৎ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। কিন্তু আশ্বাসই সার। কিছুতেই এই আইন কার্যকর হচ্ছে না। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে এই আইন কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। আবার একটা নির্বাচন এসে গেল। কিন্তু কোথায় কি! এই পরিস্থিতিতে ফের শোনা যাচ্ছে চলতি মাসেই নাকি পশ্চিমবঙ্গ তথা দেশ জুড়ে কার্যকর হতে পারে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের একটি সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। সদ্য দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর এমনই দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাই পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া অধ্যুষিত লোকসভা কেন্দ্রগুলির অন্তর্গত মানুষের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
একটি সূত্রে খবর, নাগরিকত্ব দেওয়ার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ইতিমধ্যেই ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলেছে বলে খবর। সেক্ষেত্রে অনলাইনে আবেদন করে নাগরিকত্ব পেতে পারেন বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ভারতে প্রবেশ করা মুসলিম বাদে একাধিক ধর্মের মানুষ। অনলাইনে আবেদনপত্র পাওয়ার পর সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অনলাইনেই নাগরিকত্বের শংসাপত্র দেবে কেন্দ্র।
কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কাকদ্বীপের নিশ্চিন্তপুরে একটি সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে দাবি করেন, এক সপ্তাহের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি দেশের প্রতিটি রাজ্যে সিএএ চালু করা হবে। লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের প্রতিটি মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। যদিও পরে শান্তনু ঠাকুর বলেছেন এক সপ্তাহের বেশি লাগলেও শীঘ্রই লাগু হবে সিএএ। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তা বিষয়টি নিয়ে বলেছেন, “এক বার ধারা তৈরি হয়ে গেলে সিএএ রূপায়ণে কোনও বাধাই থাকবে না। আইনের ধারা অনুযায়ী যে বা যারা যোগ্য, তাঁরা আবেদন করে ভারতের নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন।”
সিএএ আইনের সাহায্যে মূলত ধর্মীয় অত্যাচারের শিকার হওয়া হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, পার্সি, খ্রিস্টান ও জৈন শরণার্থীরা পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে নাগরিকত্ব পাবেন। কিন্তু মুসলিম-সহ অন্য কোনও বিদেশি শরণার্থীর জন্য সিএএ লাগু হবে না। আর সেই তালিকায় মুসলিমদের রাখা হয়নি বলেই অ-বিজেপি দলগুলি সোচ্চার হয়েছে। যদিও মতুয়া সম্প্রদায় বহুদিন ধরেই এই আইন কার্যকর করার দাবি জানিয়ে আসছে। আসলে বিজেপি বুঝে গিয়েছে এবারেও যদি সিএএ আইনটি কার্যকর না হয় তাহলে বনগাঁ, দমদম, বারাসত, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট-সহ মতুয়া অধ্যুষিত বেশ কয়েকটি লোকসভায় বিজেপি হেরে যাবে। তাই নতুন করে এই আইন চালু হবে বলে প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু যতই প্রচার করা হোক না কেন, আইন শেষমেশ কার্যকর না হলে মতুয়ারা এবার কিন্তু বিজেপিকে ঢেলে ভোট দেবেন না। আর সেই আশঙ্কা থেকেই কেন্দ্র ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করছে বলে মনে করা হচ্ছে। শেষপর্যন্ত চলতি মাসে বিজেপি নেতাদের দাবি মতো সিএএ কার্যকর হয় কিনা এখন সেটা দেখার।