নিজস্ব প্রতিনিধি: ভোট পণ্ডিতরা বহুদিন ধরেই বলছেন দিল্লির সিংহাসনের রাস্তা দেখিয়ে দেয় উত্তরপ্রদেশ। এই রাজ্যে ৮০টি আসন রয়েছে। তাই সেখানে ভাল ফল করা মানেই দিল্লি দখলের দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে যাওয়া। গত দুটি লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ঝড়ে উত্তরপ্রদেশে সাফ হয়ে গিয়েছে বিরোধীরা। গতবার জোটসঙ্গীদের নিয়ে বিজেপি এই রাজ্যে ৬৪টি আসন পায়। তার আগের বার পেয়েছিল ৭৩টি আসন। কিন্তু এবার ‘খেলা’ ঘুরে গিয়েছে বলে বিরোধীদের দাবি।
এই পরিস্থিতিতে রাহুল গান্ধী ও অখিলেশ যাদবের একটি জনসভায় যে জনজোয়ার হয়েছে তা দেখে হতবাক রাজনৈতিক মহল। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের ফুলপুরে যৌথ জনসভা করে কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টি। সেখানে এতটাই ভিড় হয় যে রাহুল ও অখিলেশ বক্তব্য রাখতে পারেননি। জমায়েতের একটা বড় অংশ মঞ্চের কাছে এসে রাহুল-অখিলেশকে ছুঁতে চাইছিল। সেই আবেগের বিস্ফোরণ এতটাই তীব্র আকার নেয় যে, সভায় পদপিষ্টের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এমনকী মঞ্চ ভেঙে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন পুলিশকর্মীরা। এরপর আর বক্তব্য রাখার সুযোগ পাননি রাহুলরা। কোনও ভাবে সেখান থেকে বেরোতে পেরেছিলেন তাঁরা। স্বাভাবিকভাবেই এই প্রবল ভিড় চিন্তায় ফেলে দিয়েছে বিজেপিকে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, ভিড় যদি কোনও সংকেত হয় তাহলে এবার উত্তরপ্রদেশের বহু লোকসভা কেন্দ্রে বুথে বুথে প্রলয় হয়ে যেতে পারে। অখিলেশ যাদবের দাবি এবার উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসকে নিয়ে তাঁদের জোট পঞ্চাশের বেশি আসনে জিতবে। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে বিরোধীদের দাবি।
উত্তরপ্রদেশে বিজেপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টি। এছাড়া তৃতীয় পক্ষ হিসেবে রয়েছে বহুজন সমাজ পার্টি। গতবার তারা উত্তরপ্রদেশে দশটি আসনে জয়লাভ করলেও এবারে একটিতেও জেতার মতো জায়গায় নেই বলে রাজনীতির কারবারিদের ধারণা। সেক্ষেত্রে কংগ্রেস-সপা জোটের সঙ্গে বেশিরভাগ আসনে বিজেপির সরাসরি লড়াই হচ্ছে। আর তাতেই প্রমাদ গুনছে বিজেপি। লড়াই একের বিরুদ্ধে এক হওয়া মানেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেড়ে যাওয়া। সেটা ভাল করেই জানে গেরুয়া শিবির। এই আবহের মধ্যে উত্তরপ্রদেশে সপা-কংগ্রেসের সভায় যেভাবে ভিড় হচ্ছে তাতে বেশ উদ্বিগ্ন বিজেপি। তাই উত্তরপ্রদেশে বিরোধী জোট ঘুরে দাঁড়াতে পারে কিনা এখন সেটাই দেখার।