নিজস্ব প্রতিনিধি: না পারছেন ঠেলে ফেলে দিতে, না পারছেন কাছে টেনে নিতে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারকে নিয়ে কার্যত এমনই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে বিজেপিকে। গত দু’দশকে নীতিশ এতবার শিবির বদল করেছেন যা গুণে শেষ করা যাবে না। যে ঘটনায় ব্যাপক ক্ষুব্ধ বিহারের মানুষ।
এমনকী নীতিশ যে সম্প্রদায়ের সেই কুর্মিরা পর্যন্ত অসম্ভব বিরক্ত তাঁর কাণ্ডকারখানা দেখে। এই সমস্ত ফ্যাক্টরের যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে বিহারে। দেখা যাচ্ছে নীতিশের প্রচার সভায় একেবারেই ভিড় হচ্ছে না। উল্লেখ্য চলতি বছরের জানুয়ারিতে কংগ্রেস-আরজেডি-বামেদের সঙ্গ ছেড়ে ফের বিজেপির হাত ধরে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার দখলে রেখেছেন নীতিশ। এরপর থেকেই নীতিশের জনপ্রিয়তা কমতে থাকে। এর প্রভাব বিজেপির ভোটব্যাঙ্কেও পড়বে কিনা তা নিয়ে ব্যাপক আশঙ্কার মধ্যে রয়েছেন গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের পর থেকে নীতিশকে ছাড়াই প্রচার করছেন বিজেপি নেতারা। কার্যত নীতিশের প্রসঙ্গ তুলতে দেখা যাচ্ছে না তাঁদের। সবচেয়ে বড় কথা বিহার বিজেপি ইউনিট এবারে নীতিশের ফিরে আসাটা মন থেকে মেনে নিতে পারেননি। কিন্তু কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের চাপে সেটা তাঁদের হজম করতে হয়েছে। তবে তার প্রভাব যে এভাবে প্রচারে পড়বে সেটা কেউই আঁচ করতে পারেননি।
গোটা ঘটনা প্রবাহ দেখে অসম্ভব খুশি বিহারের প্রধান বিরোধী আরজেডি এবং কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রচারে নেমে গোটা রাজ্য চষে ফেলছেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। লালুপ্রসাদ যাদব পুত্রের এই পরিশ্রম দেখে বিজেপি মেনে নিচ্ছে লড়াইটা রাতারাতি বেশ কঠিন হয়ে গিয়েছে তাদের কাছে। গত লোকসভা নির্বাচনে বিহারে ৪০টি আসনের মধ্যে ৩৯টিতে জয় পেয়েছিল বিজেপি তথা এনডিএ জোট। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন বিহারে এবার বিরোধী জোট কুড়ির কাছাকাছি আসন পেয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
নীতিশের দল এবার ১৬টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তার অধিকাংশতে বিরোধীরা জিতবে বলে বিহারের পালস বলছে। স্বাভাবিকভাবেই পরিস্থিতি দেখে উদ্বেগ বেড়েছে বিজেপি। নীতিশের কারণে তাদের ভোটব্যাঙ্কে কিছুটা হলেও ধস নামছে বলে গেরুয়া নেতৃত্ব বুঝতে পারছেন। সব মিলিয়ে বিহার রাজনীতিতে ‘পাল্টু মামা’ বলে পরিচিত নীতিশ এই লোকসভা নির্বাচনে আরও একঘরে হয়ে গেলেন।