‘‘আমাদের বয়স ৭৯, আমরা থামব না’, সুন্দরবনের প্রত্যন্ত দ্বীপে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয় এই দম্পতি

সুন্দরবন: তাঁরা লড়তে জানে। বয়সকে হার মানিয়ে প্রতিকূলতাকে জয় করতে জানে। মানুষের পাশে দাঁড়াতে জানে। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস করা হত দরিদ্র মানুষগুোর কাছে তাঁরা…

সুন্দরবন: তাঁরা লড়তে জানে। বয়সকে হার মানিয়ে প্রতিকূলতাকে জয় করতে জানে। মানুষের পাশে দাঁড়াতে জানে। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস করা হত দরিদ্র মানুষগুোর কাছে তাঁরা ভবগবান।
লঞ্চে চেপে দ্বীপে দ্বীপে পৌঁছে যান ডাক্তার আনোয়ারুল আলম।

মুমুর্ষ রোগীদের কাছে পৌঁছতে তাঁর অস্ত্র যে এই বোট৷ সেখানে ডাক্তার, একজন নার্স, একজন এক্স-রে টেকনিশিয়ান, একজন ল্যাব টেকনিশিয়ান, একজন ফার্মাসিস্ট ওষুধ ও সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত৷
গত ১০ বছর ধরে এই ভাবেই সুন্দরবনের দ্বীপে দ্বীপে ঘুরে রোগীদের সেবা করে চলেছেন ডাক্তার আলম৷ এক নেপথ্যে রয়েছেন এক দম্পতি৷ মহম্মদ আবদুল ওয়াহাব এবং সাবিত্রী পাল৷ এই দম্পতি দ্বারা নিযুক্ত প্রথম চিকিৎসকদের মধ্যে একজন হলেন ডাক্তার আলম৷

মোট চারটি নৌকা রয়েছে তাঁদের৷ প্রতিটির জন্য প্রতি সোমবার সময়সূচী নির্ধারণ করা হয়। সারা সপ্তাহ ধরে সুন্দরবনের ৩০টি দ্বীপ জুড়ে ভ্রমণ করেন তাঁরা৷ এর মধ্যে রয়েছে উত্তরে ছয়টি এবং দক্ষিণের ১৩টি ব্লক৷ রয়েছে। রবিবার, তাঁরা ফিরে আসেন মূল ভূখণ্ডে৷ কারণ, পরের সপ্তাহের জন্য ফের ওষুধপত্র মজুত করতে হবে যে৷

পুরনো দিনের কথা স্মরণ করে ওয়াহাব বলেন, ‘‘আমাদের চোখের সামনে মানুষ মারা যাচ্ছিল,’’৷  তিনি আরও বলেন, ‘‘কাশি থেকে টিবি ধরা পড়ছিল বহু মানুষের। আশেপাশের লোকেদের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারি, প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ বুকের সমস্যায় আক্রান্ত৷ রক্ত বমি  শুরু না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা চেক আপেই যান না৷ একেক সময় দেখা যায় খুব দেরি হয়ে গিয়েছে।’’ এদিকে সুন্দরবনে তখন মাত্র তিনজন ডাক্তার এবং তিন লাখের বেশি রোগী৷

সেই সব দুঃস্থ মানুষদের সাহায্য করতে চেয়েছিলেন ওই দম্পতি৷ তাঁরা কলকাতার ডাক্তারদের কথা শুনেছিলেন যাঁরা বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করছে৷ ওয়াহাব জানান, ‘‘সাবিত্রী এবং আমি ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করার জন্য এই ক্লিনিকগুলিতে ঢু দিতে শুরু করি৷ শুরু হয় আমাদের লড়াই৷’’ এই দম্পতির বয়স এখন ৭৯৷ কিন্তু, তাঁরা থেমে যেতে নারাজ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *