মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন! এভাবেই খেটেছেন সেলিম, শেষ হাসি কার?

মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন! এভাবেই খেটেছেন সেলিম, শেষ হাসি কার?

নিজস্ব প্রতিনিধি: কোনও পরিসংখ্যান তাঁর পক্ষে  নেই। লোকবল, অর্থবল বা সাংগঠনিক শক্তি, সেটাও তাঁর নেই। বিগত কয়েক বছরের ভোট পরিসংখ্যান, সেটাও তাঁর পাশে নেই। তবু এত কিছুর পরেও মুর্শিদাবাদ লোকসভার সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমকে নিয়ে বেজায় চিন্তিত তৃণমূল। যাকে বলে তৃণমূল প্রার্থী আবু তাহেরের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে। এখানে বিজেপি প্রার্থী গৌরীশংকর ঘোষ লড়ছেন বটে, কিন্তু তিনি লড়াইয়ের ময়দানে কার্যত নেই বললেই চলে। মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের ভোটাররা এবার বাইনারি করে নিয়েছেন কংগ্রেস সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী এবং তৃণমূলের মধ্যে। হয় কাস্তে-হাতুড়ি-তারা, নয়ত জোড়াফুল প্রতীক। এই প্রেক্ষাপটেই মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদ লোকসভার নির্বাচন হতে চলেছে। আর যাবতীয় পরিসংখ্যান ও অন্যান্য ভোট সম্পর্কিত বিষয়বস্তু বিপক্ষে থাকলেও বিগত দেড় মাস ধরে মহম্মদ সেলিম প্রচারে যেভাবে ঝড় তুলেছেন তার তুলনা মেলা ভার। মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন, এভাবেই তিনি জান লড়িয়ে দিয়েছেন মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে। সেলিমের ভরসা কংগ্রেসের ভোট। কারণ মুর্শিদাবাদের তিনটি লোকসভা কেন্দ্রেই এবার বাম ও কংগ্রেসের মধ্যে মসৃণ জোট হয়েছে বলে সবার ধারণা। বহুদিন আগেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী দলের কর্মী-সমর্থকদের বলে দিয়েছেন তাঁরা যেন ‘সেলিম ভাই’য়ের জন্য শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করেন। তাতে যথেষ্ট কাজ হয়েছে। প্রচারে ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন সেলিম।  

মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভার মধ্যে একটি বাদে বাকি ছটিতেই তৃণমূল গত বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতেছে। সেই সঙ্গে সরকারে থাকার জন্য তৃণমূল প্রার্থী প্রত্যাশিতভাবেই বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন, এমনটাই মনে করে রাজনৈতিক মহল। পঞ্চায়েতে নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ লোকসভার অন্তর্গত বিভিন্ন বুথে সিপিএম এজেন্ট দিতে পারেনি। সিপিএমের অভিযোগ তিনশোর বেশি বুথে ব্যাপক রিগিং হয়েছিল। তা সত্ত্বেও সেলিম নিশ্চিত এই লোকসভায় অন্য ভোট দেখবেন মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের মানুষ। যেখানে কোনও যুক্তি ও অতীতের পরিসংখ্যান খাটবে না। সেলিম প্রচারে বারবার বলেছেন মুর্শিদাবাদ লোকসভার বিভিন্ন অঞ্চলের সমস্যা তিনি জিতলে সংসদে তুলে ধরবেন। যেটা গত পাঁচ বছর তৃণমূল সাংসদ আবু তাহের করেননি বলে বাম-কংগ্রেসের অভিযোগ। এই প্রচার ব্যাপকভাবে করেছেন সেলিম। তাতে যথেষ্ট কাজ হয়েছে বলে বামেদের দাবি। এই পরিস্থিতিতে সেলিম শুধু নিজের লড়াই লড়ছেন না, তিনি সিপিএম তথা বামেদের শূন্য থেকে টেনে তুলতে চাইছেন। সিপিএম রাজ্যে শূন্য হয়ে গিয়েছে, এ কথা বারবার শুনতে কমরেডদের আর ভাল লাগছে না। সেই জায়গা থেকে সেলিম গোটা দেশের রেড ব্রিগেডের মুখ হিসেবে যেন মুর্শিদাবাদে লড়ছেন। তাই এই কেন্দ্রে শেষ হাসি কে হাসবেন তা ফলাফল প্রকাশের দিনই বোঝা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *