রেশন দুর্নীতি মামলায় হঠাৎই কেন তৎপরতা বাড়াচ্ছে কলকাতা পুলিশ? জল্পনা তুঙ্গে

রেশন দুর্নীতি মামলায় হঠাৎই কেন তৎপরতা বাড়াচ্ছে কলকাতা পুলিশ? জল্পনা তুঙ্গে

kolkata police

নিজস্ব প্রতিনিধি: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, কয়লা পাচার, গরু পাচারের পর রাজ্য রাজনীতিতে অন্যতম চর্চিত বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে রেশন দুর্নীতি। হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির সন্ধান পেয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী-সহ বেশ কয়েকজন। যতদিন যাচ্ছে ততই এই মামলার তদন্তে বহু চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। এই পরিস্থিতিতে দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই ও ইডির পর এবার রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে তৎপরতা বাড়াল কলকাতা পুলিশও। কলকাতা পুলিশের অন্তর্গত প্রত্যেক ডেপুটি কমিশনারের কাছ থেকে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ১৪ মার্চ রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কী কী অভিযোগ জমা পড়েছে সেই তথ্য লালবাজারের তরফে চেয়ে পাঠানো হয়েছে বলে খবর। কলকাতা পুলিশের অন্তর্গত বিভিন্ন থানায় এ বিষয়ে কতগুলি অভিযোগ জমা পড়েছে, তার ভিত্তিতে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, মামলাগুলি বর্তমানে কী অবস্থায় রয়েছে, এই সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে লালবাজার, এমনটাই সূত্রের খবর।

ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরই রেশন দুর্নীতি কাণ্ড প্রকাশ্যে আসে। এরপর ইডি গ্রেফতার করে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যকে। তাঁদের জেরা করে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পান ইডি আধিকারিকরা। সেই সূত্রে গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে যায় ইডি। সেখানে বেনজির হামলার শিকার হন ইডি আধিকারিকরা। ঘটনায় তিন ইডি আধিকারিক গুরুতর আহত হন। সেই ঘটনার ৫৫ দিন পর রাজ্য পুলিশ গ্রেফতার করে শাহজাহানকে। তবে কয়েকদিন পরেই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে শাহজাহানকে হেফাজতে নেয় সিবিআই। সম্প্রতি সিবিআই আধিকারিকরা সন্দেশখালিতে গিয়ে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালান। তাঁরা গিয়েছিলেন শঙ্কর আঢ্যের বাড়িতেও। কারণ শঙ্করকে ৫ জানুয়ারি রাতে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার সময় বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। সেই সূত্রে বনগাঁ ও সন্দেশখালিতে গিয়ে সেদিনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে সিবিআই।

এই আবহের মধ্যে রেশন দুর্নীতি কাণ্ড নিয়ে হঠাৎই যেভাবে তৎপরতা বাড়াল কলকাতা পুলিশ, তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, সিবিআই ও ইডির তদন্তে ব্যাঘাত সৃষ্টি করতেই পুলিশের এই পদক্ষেপ। যদিও এ বিষয়ে কলকাতা পুলিশের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।  লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার আগে কলকাতা পুলিশের এই তৎপরতা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে কী রেশন দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের পাশাপাশি কলকাতা পুলিশও সমান্তরাল ভাবে তদন্ত চালাবে? তাতে কী আগামী দিনে যোগ দিতে পারে রাজ্য পুলিশও? এর ফলে এই মামলায় আরও বড় মাথার খোঁজ পাওয়া যাবে? এই সমস্ত প্রশ্ন স্বাভাবিক ভাবেই উঠছে। তাই রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে আগামী দিনে নতুন কোনও বাঁক আসে কিনা সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *