গার্ডেনরিচ-কাণ্ডে মেয়রের উল্টো সুর ডেপুটি মেয়রের মুখে! বিভাজন তৃণমূলে?

গার্ডেনরিচ-কাণ্ডে মেয়রের উল্টো সুর ডেপুটি মেয়রের মুখে! বিভাজন তৃণমূলে?

garden reach

নিজস্ব প্রতিনিধি: গার্ডেনরিচ কাণ্ডে বন্দর এলাকার ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শামস ইকবালকে ক্লিনচিট দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু এই ইস্যুতে পুরোপুরি ভিন্ন সুর শোনা গেল ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের মুখে। মঙ্গলবার স্পষ্ট জানালেন এই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না সেখানকার কাউন্সিলর। অতীন ঘোষ তাৎপর্যপূর্ণভাবে বলেছেন,”যে চেয়ারে বসে নিয়ন্ত্রণের দায় তাঁর। প্রোমোটারের সঙ্গে কাউন্সিলর সব সময় থাকলে দায় এড়ানো যায় না। আমার ওয়ার্ড হলে দায় এড়াতে পারতাম না। আমাকেও ব্যাখ্যা দিতে হতো।”

সেই সঙ্গে তাঁকে আরও বলতে শোনা গিয়েছে, “ভোটকেন্দ্রিক রাজনীতির ফলে প্রশাসনের পদক্ষেপ শ্লথ হয়ে যায়।” উল্লেখ্য বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় বিরোধীরা যখন অনেকের সঙ্গে কাউন্সিলরের দিকেও অভিযোগের আঙুল তুলছেন, তখন মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন,”কাউন্সিলর নন, বেআইনি নির্মাণ দেখার দায়িত্ব নির্মাণ বিভাগের আধিকারিকদের। তাঁরা এই কাজের জন্য বেতন পান। তাঁদের ইতিমধ্যেই শো-কজ করা হয়েছে।” ঘটনা হল গার্ডেনরিচের ঘটনায় ধৃত প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিমের সঙ্গে তৃণমূল কাউন্সিলর শামস ইকবালের একাধিক ছবি (যে ছবির সত্যতা যাচাই করেনি ‘আজ বিকেল’) সামনে এসেছে। আর সেই বিষয়টি নিয়েই সরব হয়েছে বিরোধীরা। এই আবহের মধ্যে কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ যা বলেছেন তাতে নিঃসন্দেহে অস্বস্তি বাড়ল মেয়র তথা বন্দরের তৃণমূল বিধায়ক ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের।

উল্লেখ্য তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলেই শোনা যায় অতীন ঘোষ দীর্ঘদিন ধরেই মেয়র ফিরহাদের বিরোধী। একটা সময় জল্পনা তৈরি হয়েছিল যে মেয়র করা হবে অতীন ঘোষকে। যদিও সেটি জল্পনার স্তরেই থেকে যায়। ২০০০ সাল থেকে যারা মেয়র হয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকেই দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্রিক। অর্থাৎ আড়াই দশক হয়ে গেলেও উত্তর বা মধ্য কলকাতার কেউ মেয়র হননি।  কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল তৈরি হওয়ার পর প্রথম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছেন অতীন ঘোষ। সেই জায়গা থেকে অতীনের এই মন্তব্যের অভিঘাত তৃণমূলের অন্দরে যথেষ্টই পড়েছে বলে জানা যাচ্ছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে ফিরহাদ বা তৃণমূলের অন্য কোনও শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, এই ঘটনায় কী তৃণমূলের বিভাজন স্পষ্ট হয়ে গেল? অতীন যে দাবি করছেন তা কী আদৌ উড়িয়ে দেওয়া যায়? সূত্রের খবর অতীনের এই বক্তব্য সমর্থন করছেন তৃণমূলের একাধিক নেতা-নেত্রী। সবমিলিয়ে বিষয়টি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

6 + nineteen =