নিজস্ব প্রতিনিধি: গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রতি ব্যাপক জনসমর্থন দেখা গিয়েছে। বিশেষ করে মহিলা ভোটের বড় অংশ পেয়েছিল তৃণমূল। এর প্রধান কারণ ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের ঘোষণা। এছাড়া বেশ কিছু সামাজিক প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যবাসীর বড় অংশের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মাসে মাসে চলে যাচ্ছে নির্দিষ্ট অঙ্কের ভাতা। যে বিষয়টির মোকাবিলা করতে গিয়ে বিজেপিও পাল্টা হাজার হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। মধ্যপ্রদেশে গত বিধানসভা নির্বাচনে কার্যত হারা ম্যাচ জিতে গিয়েছে বিজেপি। রাজনৈতিক মহল মনে করে সেখানে মহিলাদের ‘লাডলি বাহেনা’ যোজনার মাধ্যমে যেভাবে প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে সেটাই বিজেপির বড় জায়ের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল।
এই পরিস্থিতিতে নতুন একটি ক্ষেত্রে ভাতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেটি হল ‘সংগ্রামী ভাতা’। মিথ্যে মামলায় জেল খাটা বিজেপি নেতা-কর্মীদের জন্য ‘সংগ্রামী ভাতা’র ঘোষণা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সরকারে এলে এই ভাতা দেওয়া হবে বলে নন্দীগ্রামের জনসভা থেকে জানিয়েছেন শুভেন্দু। শুভেন্দু বলেছেন তাঁরা বাংলায় ক্ষমতায় এলে ৫ হাজার টাকা করে ‘সংগ্রামী ভাতা’ দেওয়া হবে। শুভেন্দু এক দলীয় কর্মীকে বলেন, ‘আমরা যেদিন সরকার গড়ব তোমায় পেনশন দেব।’ এরপর শুভেন্দু ঘোষণা করেন, ‘যত জনকে জেল খাটিয়েছে, বিজেপি যেদিন সরকারে আসবে সবাইকে সংগ্রামী ভাতা দেওয়া হবে। যত জনকে জেল খাটিয়েছে ৫ হাজার টাকা করে সংগ্রামী ভাতা দেব। যে তদন্তকারী অফিসাররা রিপোর্ট দিয়ে জেল খাটিয়েছেন, তাদের নাম লেখা থাকল। হুঁশিয়ারি নয়, সতর্ক করে রাখলাম।’
এর আগে শুভেন্দু বিভিন্ন সভা থেকে বারবার বলেছেন আগামী দিনে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এলে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ৫০০ থেকে বাড়িয়ে তিন হাজার করে দেওয়া হবে। এই সমস্ত ঘোষণা থেকে স্পষ্ট ভাতা দেওয়ার রাজনীতি, অর্থাৎ ‘ডোল পলিটিক্স’ রাজনৈতিক দলগুলির অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। কারণ তৃণমূলও নিয়মিত সরকারের বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের কথা প্রতিটি জনসভায় তুলে ধরছে। আর সেই প্রচারকে কাউন্টার করতে বিজেপিও পাল্টা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভাতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। সেই সূত্রে শুভেন্দুর নতুন ঘোষণা ‘সংগ্রামী ভাতা’। যথারীতি তৃণমূল বিষয়টিকে নিয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে অন্যান্য জনসভাতেও শুভেন্দু একই প্রতিশ্রুতি দেন কিনা সেদিকে চোখ থাকবে সবার।