নিজস্ব প্রতিবেদন: ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে তাঁকে প্রাক্তন করে দেবেন, এমন হুঁশিয়ারি বহুবার দিয়েছিলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। কিন্তু কোথায় কি! শেষ পর্যন্ত সেখানে দাঁড়ানোর সাহস পাননি তিনি। নানা যুক্তি খাড়া করে অন্য প্রার্থীকে দাঁড় করিয়েছে আইএসএফ। একই ভাবে বিজেপিও ডায়মন্ড হারবারে জেতা নিয়ে এমন দাবি করেছিল যাতে মনে হয়েছিল তারা কোনও হেভিওয়েটকে সেখানে দাঁড় করাবে। কিন্তু কিছুই হল না। দুটি দলেরই হাওয়া বেরিয়ে ফুস হয়ে গিয়েছে।
অনেক দেরি করে সেখানে দলীয় প্রার্থীর নাম মঙ্গলবার ঘোষণা করেছে বিজেপি। অভিষেকের বিরুদ্ধে বিজেপির টিকিটে লড়বেন অভিজিৎ দাস। রাজ্য রাজনীতিতে তাঁর নাম পরিচিত না হলেও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলায় পুরনো বিজেপি কর্মী হিসেবেই পরিচিত অভিজিৎ। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় বিজেপির জেলা সভাপতিও ছিলেন তিনি। সবচেয়ে বড় কথা ২০১৪ সালেও অভিষেকের বিরুদ্ধে ডায়মন্ড হারবারে প্রার্থী হয়েছিলেন অভিজিৎ দাস। ভোট পেয়েছিলেন ২ লক্ষ। সেবার তৃতীয় হয়েছিলেন তিনি। ২০০৯ সালেও ডায়মন্ড হারবার থেকে লড়েছিলেন অভিজিৎ দাস। সেবার ভোট পেয়েছিলেন ৩৭ হাজারের মতো। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে একাধিক ব্যক্তির নাম নিয়ে জল্পনা হয়েছে। কখনও রুদ্রনীল ঘোষ, কখনও শঙ্কুদেব পণ্ডা, কখনও কৌস্তভ বাগচী। কিন্তু সেই বিষয়টি জল্পনার স্তরেই থেকে গিয়েছে।
জানা গিয়েছে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ সংঘ পরিবার অভিজিৎকে প্রার্থী করার দাবি তুললেও দলেরই কেউ কেউ চাইছিলেন বাইরে থেকে ‘বড়’ কোনও নামকে এনে প্রার্থী করা হোক। তবে শেষ পর্যন্ত সেই রাস্তায় হাঁটেনি গেরুয়া শিবির। স্থানীয় মুখকেই প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছে তারা। যদিও রাজনৈতিক মহল মনে করছে অভিষেকের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নিশ্চিত হারের ভয়েই সেখানে তথাকথিত হেভিওয়েটরা কেউ দাঁড়াতে চাননি। কিন্তু প্রশ্ন, তাহলে এত তর্জন গর্জন কেন করছিল বিজেপি এবং আইএসএফ? সেখানে জবরদস্ত প্রার্থী দাঁড় করিয়ে অভিষেককে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে তারা ফেলে দিতে পারবে, এমন পরিস্থিতি তারা অন্তত মুখে মুখে বলে তৈরি করেছিল। কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে কিছুই দেখা গেল না। রাজনৈতিক মহল মনে করছে অভিষেক ‘খেলা’র আগেই জিতে গেলেন, অর্থাৎ ওয়াকওভার পেয়ে গেলেন তিনি। সবমিলিয়ে এই লোকসভা কেন্দ্রে বলার মতো যে লড়াই হচ্ছে না সেটা স্পষ্ট।