নিজস্ব প্রতিনিধি: বেশ কিছুদিন ধরেই রাজ্যে এসে লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর প্রত্যেকটি জনসভায় যে সমস্ত শব্দ চয়নের মাধ্যমে তিনি বক্তব্য রাখছেন, তাতে এটাই স্পষ্ট প্রতিটি ক্ষেত্রে হোমওয়ার্কের ছাপ দেখা যাচ্ছে। প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি বাক্য তাঁর মুখ থেকে শোনা যাচ্ছে যেখানে আগে থেকেই হোম ওয়ার্ক করা থাকছে। বস্তুত ভারতীয় রাজনীতিতে বেশ কয়েক বছর ধরেই কর্পোরেটের ছোঁয়া লেগেছে। সে ব্যাপারে বিজেপিকে নিঃসন্দেহে পথিকৃৎ বলা যেতে পারে। ভারতীয় রাজনীতিতে কর্পোরেট স্টাইলের আমদানি নিঃসন্দেহে গেরুয়া শিবির করেছে।
এই যেমন ধরা যাক মঙ্গলবার বালুরঘাট ও রায়গঞ্জে মোদির সভার কথা। বালুরঘাটে উল্লেখযোগ্য হারে দলিত ও আদিবাসী ভোট রয়েছে। তাই সুকৌশলে এক বছর আগেকার ঘটনা নতুন করে তুলে ধরে বিতর্ক উস্কে দিলেন মোদি। উল্লেখ্য গত বছরের এপ্রিলে বালুরঘাটে তিন আদিবাসী মহিলা বিজেপিতে যোগদান করার পর তৃণমূলের চাপে তাঁদের শাসক দলে ফিরে আসতে হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এমনকী ‘প্রায়শ্চিত্ত’ করে তাঁদের দণ্ডি কেটে তৃণমূলে ফিরতে হয় স্থানীয় নেতা-নেত্রীদের নিদানে, এমনটাই অভিযোগ করে বিজেপি। যে ঘটনায় রাজ্য জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। তাই মোদি ঠিক সময়ে বিতর্ক উস্কে দিয়ে বলেছেন,”এই বালুরঘাটে তিন আদিবাসী মহিলা বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন বলে তৃণমূলের লোকজন এসে তাঁদের চরম হেনস্থা করেছে।
বিজেপি জনজাতিদের পাশে থাকে, এটা তৃণমূল ভাল ভাবে নেয় না।” ঘটনা হল সাম্প্রতিককালে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব বালুরঘাটে বহু প্রচার করলেও এই প্রসঙ্গ কিন্তু সেভাবে তুলে ধরেননি। যথারীতি চিত্রনাট্য অনুযায়ী এই বক্তব্য তুলে ধরেছেন মোদি, এমনটাই মনে করে রাজনৈতিক মহল। আসলে রাজ্যে বারবার এসে এক একটি কেন্দ্রে বক্তব্য রাখার সময় বিশেষ একটি ‘ক্যাচ লাইন’ উঠে আসছে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে। যে বিষয়টি খবরের শিরোনামে চলে আসছে। এটা নিপুণ ভাবে করে চলেছে বিজেপি। কোন জনসভায় বাংলার কোন কবির লেখা কবিতার লাইন তুলে ধরবেন মোদি, সেটাও আগে থেকে ঠিক করে রাখা হচ্ছে বলে খবর। তাই মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গে সভা করতে এসে মোদিকে সুকুমার রায়ের কবিতা উদ্ধৃত করে বক্তব্য রাখতে দেখা গিয়েছে। সবটাই চলছে চেনা ছক মেনে। আর এটাই যে মোদির ইউএসপি সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।