রাজনীতি সম্ভাবনার শিল্প! অধীরের গলায় সিপিএমের উত্তরীয় সেটাই প্রমাণ করল

রাজনীতি সম্ভাবনার শিল্প! অধীরের গলায় সিপিএমের উত্তরীয় সেটাই প্রমাণ করল

নিজস্ব প্রতিনিধি: কথায় বলে রাজনীতি হচ্ছে সম্ভাবনার শিল্প। কখন কী হবে সেটা আগে থেকে বলা যায় না। ফের সেটা প্রমাণ হল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরীর গলায় সিপিএমের উত্তরীয় দেখে। বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ লোকসভার সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের মনোনয়ন পেশের সময় তাঁর পাশে ছিলেন অধীর। আর তখনই তাঁর গলায় সিপিএমের উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া হয়। ‌এই দৃশ্য দেখে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। শুধু কয়েক দশক পিছিয়ে যাওয়ার পালা। সিপিএমের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ করে একের পর এক নির্বাচনে জিতেছিলেন অধীর। এই অধীরকে সিপিএম আমলে জেলে যেতে হয়েছিল। একটা সময় এমন অবস্থা হয়েছিল তিনি মুর্শিদাবাদ জেলায় ঢুকতে পারতেন না।

১৯৯৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম কেন্দ্র থেকে অধীর প্রার্থী হয়েছিলেন। একদিনের জন্যেও সেখানে প্রচার করতে যেতে পারেননি তিনি। তখন পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন অধীর। তাতেও ২০ হাজারের বেশি মার্জিনে জিতেছিলেন তিনি। পরবর্তী সময়ে বামফ্রন্ট প্রার্থীকে হারিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন বহরমপুর কেন্দ্র থেকে। বহরমপুর তথা মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে সিপিএম-কংগ্রেসের সংঘর্ষে কত জনের যে মৃত্যু হয়েছে তা গুণে বলা যাবে না। বাম আমলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে রক্ত গঙ্গা বয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলায়। সিপিএম এবং কংগ্রেস দুই দলেরই প্রচুর কর্মী-সমর্থক খুন হয়েছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই অধীরের গলায় সিপিএমের উত্তরীয় দেখে অনেক পুরনো ঘটনা মনে পড়ে যেতে বাধ্য।

২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় বামেদের সঙ্গে জোট করেছিলেন অধীর। তখন তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল যে, তিনি সিপিএমের সবচেয়ে বেশি বিরোধী হলেও মনে করেন তৃণমূল আরও খারাপ দল। তাই তৃণমূলকে হারানোর জন্য সেই বিধানসভা নির্বাচনে বাম- কংগ্রেসের জোট হয়েছিল মূলত অধীরের উদ্যোগে। রাজ্য তথা গোটা দেশ দেখেছিল কলকাতায় রাহুল গান্ধীর প্রচার সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সেদিন বুদ্ধদেবের গলাতেও কংগ্রেসের উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এবার অধীরের গলায় দেখা গেল সিপিএমের উত্তরীয়। এভাবেই তাহলে বৃত্তটা সম্পূর্ণ হল? এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে। কিছুদিনের মধ্যেই সেলিমের সমর্থনে অধীর এবং পাল্টা অধীরের সমর্থনে সেলিম সভা করবেন বলে জানা গিয়েছে। তার শুরুটা কিন্তু এদিনই হয়ে গেল। যা নিঃসন্দেহে রাজ্য রাজনীতিতে একটা বড় চমক হিসেবেই পরিগণিত হচ্ছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *