কলকাতা: কর বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে৷ আয়কর, জিএসটি, সার্ভিস কর, গিফটের উপর কর, রোড ট্যাক্স ইত্যাদি ইত্যাদি৷ আমরা সকলেই কমবেশি সেই সব কর পরিশোধও করে থাকি। এইসব ট্যাক্স পেমেন্টের ক্ষেত্রে কিন্তু কোনও লিঙ্গভেদ নেই। অর্থাৎ পুরুষ হোক বা নারী, সকলকেই এইসব কর দিতে হবে। কিন্তু জানেন কি এমন একটি কর রয়েছে যা দিতে হয় শুধুমাত্র মহিলাদেরই। যাবে বলে Pink Tax বা গোলাপী কর৷ এখন দেখা যাক এই Pink Tax আসলে কী? কেন দিতে হয় এই কর? কী ভাবেই বা তা সংগ্রহ করা হয়?
Pink Tax বা গোলাপী কর শব্দটির সঙ্গে প্রথম পরিচয় ঘটে ২০১৫ সালে। নিউইয়র্কের একটি বিভাগ সেই বিভাগেরই বেশ কিছু জিনিস নিয়ে রিসার্চ শুরু করে৷ তাতে দেখা যায়, পুরুষদের জন্য তৈরি বিভিন্ন জিনিসের তুলনায় মহিলাদের জন্য তৈরি জিনিস বাজারে বিকোচ্ছে অনেকটাই বেশি দামে। একই ধরনের জিনিস, একই ধরনের প্রোডাক্ট হওয়া সত্ত্বেও মহিলারা পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি দামে সেই জিনিস কিনছে৷ সেই সময় মহিলাদের কাছ থেকে গোপনে কর আদায়ের বিরুদ্ধে অনেকেই সোচ্চার হয়েছিলেন৷ কিন্তু এর পরেও গোলাপী কর আদায় করা হচ্ছে বিশ্বজুড়ে।
জানেন কী ভাবে এই কর আদায় করা হয়?
এই ধরনের কর মূলত মহিলাদের জন্য তৈরি জিনিসের উপরেই চাপানো হয়ে থাকে। দেখা গিয়েছে, মহিলারা সাধারণত তাঁদের মেক-আপের সামগ্রী, নেইল পেইন্ট, লিপস্টিক, আর্টিফিশিয়াল জুয়েলারি, স্যানিটারি প্যাড ইত্যাদি পণ্য কেনার জন্য বেশি টাকা খরচ করে থাকেন। আবার পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্যই তৈরি পণ্য যেমন- পারফিউম, পেন, ব্যাগ, চুলের তেল, রেজার, জামাকাপড় একই কোম্পানির হওয়া সত্ত্বেও, মহিলাদের জিনিসের দাম হয় অনেক বেশি। একটা উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যাক- ধরুন পুরুষদের লিপ বাম যদি ৭০ টাকায় পাওয়া যায়, তাহলে মহিলাদের লিপ বামের জন্য দিয়ে হয় প্রায় ১৫০ টাকা। পুরুষদের ডিও ১০০ টাকায় বিক্রি হলে, মহিলাদের ডিও-র দাম পড়ে ১১৫ টাকা৷ জামা কাপড়ের ক্ষেত্রেও একই ফর্মুলা প্রযোজ্য৷ এমনকি চুল কাটার ক্ষেত্রেও এই বৈষম্য স্পষ্ট৷
পিঙ্ক ট্যাক্সের সমস্যা শুধু ভারতের নয়, এই সমস্যার সঙ্গে ঝুঝতে হচ্ছে গোটা বিশ্বের মহিলাদের। ২০১৫ সালে সর্বপ্রথম এই কর লাগু হয় মার্কিন মুলুকে৷ সেখানকার সংস্থাগুলির যুক্তি ছিল, মহিলাদের জন্য পণ্য তৈরিতে তাদের খরচ পড়ে বেশি৷ পাশাপাশি এও দাবি করা হয়, মহিলারা একই ধরনের জিনিসের জন্য বেশি অর্থ দিতে প্রস্তুত, তাই বাজারে ব্যবসা জমাতে এই সুবিধা নেওয়াই উচিত।