shahjahan siraj
নিজস্ব প্রতিনিধি: ৫ জানুয়ারি ইডি আধিকারিকদের উপর বেনজির হামলার ঘটনার পর কেটে গিয়েছে ৪৮টি দিন। এখনও বেপাত্তা সন্দেশখালির ‘বেতাজ বাদশা’ তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। যার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে গ্রামবাসীদের। শেখ শাহজাহান ও তাঁর দলবলের তাণ্ডবে বিগত কয়েক বছর ধরে গ্রামবাসীদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। সেই সঙ্গে মহিলাদের উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে শাহজাহানের সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে এবার সামনে চলে এল বেপাত্তা তৃণমূল নেতার ভাই শেখ সিরাজউদ্দিনের কার্যকলাপ। তাঁর বিরুদ্ধেও ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে গ্রামবাসীদের। যাকে বলে একা শাহজাহানে রক্ষা নেই, ভাই শেখ সিরাজউদ্দিন তার দোসর! নেপথ্যে আরও কত চরিত্র রয়েছে সেখানে, স্বাভাবিকভাবেই সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন বেপাত্তা তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের ভাই শেখ সিরাজউদ্দিন। তাঁর বিরুদ্ধেও জমি দখল, খেলার মাঠ দখল-সহ ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে। এই সমস্ত অভিযোগ নিয়ে পথে নেমে বৃহস্পতিবার সিরাজউদ্দিনের ভেড়ির আলঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। আর মহিলাদের মারমুখী ভূমিকায় দেখে মোটরবাইক নিয়ে পালাতে বাধ্য হন শেখ সিরাজউদ্দিন। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে সন্দেশখালির দু নম্বর ব্লকের বেড়মজুর-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝুপখালিতে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ গ্রামের একটি জমি দখল করে ভেড়ি তৈরির চেষ্টা করছেন সিরাজ। বারবার বাধা দিয়েও লাভ হয়নি বলে গ্রামের পুরুষ মহিলাদের অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে সিরাজউদ্দিনের ভেড়ির কাছে স্থানীয়রা জড়ো হন। তৃণমূল নেতার ভাইয়ের সঙ্গে তীব্র বিবাদে জড়িয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা। একটা সময় সিরাজের দিকে লাঠি হাতে তেড়ে যান গ্রামের মহিলারা। তখন সেখান থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন সিরাজ। তখনই সিরাজউদ্দিনের আলঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় গ্রামবাসীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে ডিআইজি বারাসত ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী। এরপর পুলিশকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন গ্রামবাসীরা। পুলিশের হস্তক্ষেপে দীর্ঘক্ষণ পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
অভিযোগ শাহজাহানের ছায়াসঙ্গী জিয়াউদ্দিন মোল্লা-সহ অনেককে সঙ্গী করে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামে গ্রামে তাণ্ডব চালিয়ে এসেছেন সিরাজউদ্দিন। উল্লেখ্য প্রথমে সন্দেশখালি কাণ্ডে শুধু শেখ শাহজাহানের নাম উঠে আসে। এরপর উঠে আসে শিবপ্রসাদ হাজরা ও উত্তম সর্দারের নাম। এবার সামনে এল সিরাজউদ্দিন ও জিয়াউদ্দিন মোল্লার নাম। তাই প্রশ্ন, আরও কত চরিত্র রয়েছে সেখানে? তবে কি ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে? স্বাভাবিকভাবেই গ্রামবাসীদের দাবি, শাহজাহানের পাশাপাশি তাঁর ঘনিষ্ঠ অনুগামীদেরও কঠিন শাস্তি দিতে হবে। আর এই সমস্ত দাবিদাওয়া নিয়েই চলছে বিক্ষোভ। কিছুতেই বিক্ষোভের আগুন নিভছে না সন্দেশখালিতে। তাই সন্দেশখালি কাণ্ডে অভিযুক্ত হিসেবে আগামী দিনে আরও কত নাম উঠে আসে সেটাই দেখার।