ইন্টারনেটের ‘মেরুদণ্ড’ গুঁড়িয়ে দেওয়ার ছক? ব্রিটিশ উপকূলে রুশ জাহাজ ঘিরে বাড়ছে আশঙ্কা

ইন্টারনেটের ‘মেরুদণ্ড’ গুঁড়িয়ে দেওয়ার ছক? ব্রিটিশ উপকূলে রুশ জাহাজ ঘিরে বাড়ছে আশঙ্কা

কলকাতা:  ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লাগাতার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রুশ সেনা৷ বাড়ছে আক্রমণের তেজ৷ এই অবস্থায় ইউরোপীয় দেশগুলিতে গ্যাস সরবরাহকারী  পাইপলাইনে বিস্ফোরণ ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। এ বার কি সাগরের অতলে ইন্টারনেটের ‘মেরদণ্ড’ গুঁড়িয়ে দেওয়ার মতলব করছে মস্কো?  ব্রিটিশ উপকূলবর্তী সমুদ্রে রুশ জাহাজের যাত্রাপথ বদলের পরই মাথাচাড়া দিয়েছে এই আশঙ্কা৷ 

আরও পড়ুন- সিত্রাং বিদায়ে ফের অশনি সঙ্কেত! আসছে আরও একটি ঘূর্ণিঝড়, সতর্ক করল আবহাওয়া দফতর

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, গবেষণামূলক কাজের জন্য সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিল ওই রুশ জাহাজটি। তবে নির্ধারিত পথ ছেড়ে আচমকাই দিক পরিবর্তন করে সেটি। এর পরেই প্রশ্ন ওঠে জাহাজটির ‘প্রকৃত উদ্দেশ্য’ নিয়ে৷ 

প্রশ্ন উঠছে সমুদ্রের গভীরে থাকা ইন্টারনেট-এর মেরুদণ্ড ভেঙে দিতে চাইছে না তো পুতিন সরকার? কারণ, সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে অংসখ্য কেব্‌ল চলে গিয়েছে৷ যার মাধ্যমেই ইন্টারনেটের সুবিধা ভোগ করেন বিশ্ববাসী৷ সেই ‘মেরুদণ্ডে’ আঘাত হানতে চাইছে না তো মস্কো? না কি, ওই জাহাজ পাঠানো হয়েছে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য? কেন সেটি ব্রিটিশ উপকূলের কাছে ঘোরাফেরা করছে? ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মাঝে তৈরি হয়েছে এহেন নানা আশঙ্কা৷ 

ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য সান’-এর দাবি, গত ১৭ অক্টোবর ‘আকাদেমিক বরিস পেত্রভ’ নামে ওই জাহাজটি রাশিয়ার কালিনিনগ্রাদ থেকে রওনা দেয়। ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে সেটি দক্ষিণ অতলান্তিকের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছনোর কথা ছিল সেটির। যুক্তি, বৈজ্ঞানিক অভিযান৷

কিন্তু হঠাৎ-ই ঘোষিত যাত্রাপথের বদল ঘটিয়ে অন্যদিকে রওনা দেয় এই রুশ জাহাজ৷ এৎ পর থেকেই ব্রিটিশ নৌবাহিনীর কড়া নজরে ‘আকাদেমিকে’র যাত্রাপথ৷ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ২১ অক্টোবর হঠাৎ দিকবদল করে জাহাজটি।

আগামী দিনে জাহাজটির স্কটল্যান্ডের দ্বীপপুঞ্জ পার করার কথা৷ তবে তার আগে নর্থ সি-তে নরওয়েজিয়ান তৈলভান্ডারের খুব কাছ দিয়ে খুব ধীর গতিতে চলছে জাহাজটি। এই গতিবিধি দেখার পরই জাহাজটির ‘মতলব’ নিয়ে সন্দিহান ব্রিটিশ সরকার।

ওই জাহাজটি এর পর ব্রিটেনের নৌসেনাঘাঁটি ক্রস করবে বলেও দাবি। এই ঘাঁটিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ কারণ এখানেই রয়েছে পারমাণবিক হামলা প্রতিরোধী ডুবোজাহাজ ‘ট্রাইডেন্ট’। এর পর তা আয়ারল্যান্ডের উত্তর-পশ্চিম দিকের সমুদ্র দিয়ে এগিয়ে যাবে। সেখানকার সমুদ্রগর্ভেই নিমজ্জিত রয়েছে দুই মহাদেশকে জুড়ে থাকা অসংখ্য কেব্‌ল। যা দিয়ে গোটা বিশ্ব জুড়ে থাকে অন্তর্জালে৷ 

ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য উইক’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অতলান্তিকের গভীরে আমেরিকা এবং ইউরোপকে জুড়ে রাখা কেব্‌ল পাতা রয়েছে, যা ইন্টারনেটের ‘মেরদণ্ড’। ওই কেব্‌লগুলিই গোটা বিশ্বে কমপক্ষে ৯৫ শতাংশ যোগাযোগ ব্যবস্থাকে রক্ষা করে। ইন্টারনেটের বাকি পরিষেবার দায়িত্ব উপগ্রহের৷ 

এখন যত সন্দেহ সবটাই রুশ জাহাজকে ঘিরে৷  কারণ, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের আবহে সমুদ্রের গভীরে পরিকাঠামোয় ইতিমধ্যেই আঘাত হেনেছে রাশিয়া। ২৬ সেপ্টেম্বর বাল্টিক সাগরে রাশিয়ার গ্যাস পাইপলাইন নর্ডস্ট্রিমে যে বিস্ফোরণ ঘটে, তার পিছনেও নাকি পুতিন সরকারেরই হাত৷ মনে কা হচ্ছে, ওই পাইপলাইনের পর এ বার মস্কোর নিশানায় অতলান্তিকের গভীরে থাকা ইন্টারনেট পরিকাঠামো৷