বাদশা-দেবদূতরা গেছেন, কিন্তু তথাকথিত সেই ‘নিরপেক্ষ’ বুদ্ধিজীবীরা সন্দেশখালি নিয়ে চুপ কেন?

বাদশা-দেবদূতরা গেছেন, কিন্তু তথাকথিত সেই ‘নিরপেক্ষ’ বুদ্ধিজীবীরা সন্দেশখালি নিয়ে চুপ কেন?

neutral intellectuals

নিজস্ব প্রতিনিধি: তাঁরা নাকি নিরপেক্ষ! সত্যিই এই নিরপেক্ষ শব্দটা খুব সুন্দর, দারুণ, অপূর্ব। তাই শহর তথা রাজ্যের বহু বুদ্ধিজীবী যখন নিজেদের ‘নিরপেক্ষ’ বলে দাবি করেন তখন শুনতে বেশ ভাল লাগে। রাজনৈতিক রং না দেখে তাঁরা ভাল কাজের প্রশংসা করবেন, খারাপ কাজের তীব্র নিন্দা করবেন, এটাই তো স্বাভাবিক। এমনটাই তো হওয়া উচিত। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচন, বা তার বহু আগে থেকেই একের পর এক অনিয়মের ঘটনা বাংলার বুকে ঘটে গিয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে ওই তথাকথিত ‘নিরপেক্ষ’ বুদ্ধিজীবীদের গলা ফাটাতে দেখা যায়নি।

এই পরিস্থিতিতে সন্দেশখালির ভয়াবহ ঘটনা সামনে আসলেও সেই ‘নিরপেক্ষ’ বুদ্ধিজীবীরা আগের মতোই স্পিকটি নট হয়ে রয়েছেন। মঙ্গলবার ভোরবেলায় পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে সন্দেশখালির একাধিক গ্রামে পৌঁছে গিয়েছিলেন বাম মনোভাবাপন্ন বুদ্ধিজীবী বাদশা মৈত্র, দেবদূত ঘোষ, সৌরভ পালোধি-সহ অনেকেই। তাঁরা বামপন্থী, এটাই তাঁদের প্রকাশ্য অবস্থান। কিন্তু বাংলার সুশীল সমাজের যে অংশ নিজেদের ‘নিরপেক্ষ’ বলে দাবি করেন, তাঁরা আজ কোথায় গেলেন? অভিযোগ তাঁদের অনেকেই শাসকদলের কাছ থেকে নানাভাবে সুবিধা পেয়ে থাকেন। তাই তাঁরা এখন শাসক দলের বিরুদ্ধে সামান্যতম মুখ খুলতে রাজি নন। যদি এই অভিযোগ সত্যি হয় তাহলে তা তো মারাত্মক ব্যাপার। কারণ সুশীল সমাজের বক্তব্যের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে আমাদের সমাজ জীবনে। ২০১১ সালে যে পরিবর্তন হয়েছিল তাতে  উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল বাংলার বিশিষ্ট মানুষদের। কিন্তু আজ তাঁরা কোথায় গেলেন? আসলে কেউ জেগে ঘুমোলে তাঁকে তো আর জাগানো যায় না? তবে কি সেটাই প্রতিফলিত হচ্ছে তাঁদের আচার আচরণে?

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, সন্দেশখালিতে যেভাবে গত কয়েক বছর ধরে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের একাংশের বিরুদ্ধে, মহিলাদের উপর যৌন অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে, খুনের হুমকির পাশাপাশি মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে অভিযোগ তুলে নিতে বলা হয়েছে বলে গ্রামের মহিলারা প্রকাশ্যে দাবি করছেন, এসব দেখে শুনেও কীভাবে নীরব থাকেন সুশীল সমাজের বড় অংশ? তবে কি সত্যিই সরকারের কাছ থেকে কিছু পাওয়ার আশায় সবাই কানে তুলো গুঁজে রয়েছেন? এর উত্তরটা তাঁরাই সবচেয়ে ভাল জানেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × two =