ias
নয়াদিল্লি: দিনমজুরের কাজ করতেন বাবা। কাজ না পেলে অস্থায়ী চায়ের দোকান দিতেন কখনও-সখনও। সেই দোকানেই বাবাকে সাহায্য করত ছেলেটি। গরম চায়ের কাপ হাতে নিয়ে পৌঁছে দিত ক্রেতাদের হাতে। তখন কে জানত চায়ের দোকানে কাজ করা সেই ছেলেই একদিন দেশের আমলা হবে?
ইউপিএসসি-র সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় কোনও রকম প্রশিক্ষণ ছাড়াই বসেছিলেন হিমাংশু গুপ্তা। আর প্রথমবারে পাশও করে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেও আরও দুবার ইউপিএসসি পরীক্ষা দেন । ২০১৮ সালে পরীক্ষায় পাশ করে ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ট্র্যাফিক সার্ভিসে (আইআরটিএস)-এ সুযোগ পেয়েছিলেন। ২০১৯ সালে আবার পরীক্ষা দিয়ে আইপিএস হওয়ার সুযোগ পান। কিন্তু হিমাংশু ঠিক করে নিয়েছিলেন, তিনি দেশের প্রশাসনিক কাজ করবেন। আইএএস হবেন। তাই ২০২০ সালে আবারও পরীক্ষায় বসেন। আইএএস হন। গোটা ভারতের ১৩৯ তম স্থানাধিকার করেছিলেন হিমাংশু।
উত্তরাখণ্ডে জন্ম এই আইএএসের। বাবার সামান্য আয়ের উপর কোনও রকম সংসার চলত। পড়াশোনার জন্য উত্তর প্রদেশের বরেলিতে মামার বাড়ি চলে আসেন তিনি। সেখানেই তাঁর বেড়ে ওঠা। বয়স যখন ১১ তখন বরেলীর সিরউলিতে চলে আসে তাঁর পরিবারও। সেখানেই মুদিখানার দোকান খোলেন তাঁর বাবা। ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। এই সময় হিমাংশুকে রোজ ৭০ কিলোমিটার যাতায়াত করে স্কুলে যেতে হত। এরপরই দিল্লি ইউনিভারসিটির অধীনে হিন্দু কলেজে পড়ার সুযোগ পান হিমাংশু। তারপরেই ঘুরে যায় জীবনের মোড়।
হিন্দু কলেজ থেকে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা করতে যান হিমাংশু। পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে স্নাতকোত্তরে ডিগ্রি অর্জন করেন। গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম হন হিমাংশু। যার ফলে বিদেশে পিএইচডি করার স্কলারশিপও পেয়ে যান। বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রক্রিয়া শেষও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎই সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন হিমাংশু। ঠিক করেন ভারতেই থাকবেন। এরপরেই ইউপিএসসির প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন তিনি। পর্যাপ্ত অর্থ না থাকার কারণে কোনও কোচিং নেন নি হিমাংশু। নিজের জেদ আর চেষ্টার জোরে সিভিল সার্ভিস ‘ক্র্যাক’করেছেন। তাঁর জীবনের গল্প হাজার হাজার মানুষকে স্বপ্ন দেখানোর জন্য যথেষ্ট।