নিজস্ব প্রতিনিধি: বিজেপির শক্ত ঘাঁটিতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মারাত্মক ভয় পাচ্ছেন হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতাদের একাংশ। সেই সমস্ত লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়ানোর কথা বললেই যেন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা হচ্ছে তাঁদের। তাই দেখা যাচ্ছে কংগ্রেসের তথাকথিত নেতাদের বড় অংশ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে একেবারেই ইচ্ছুক নন। কমল নাথ, অশোক গেহলট, শচীন পাইলট, দিগ্বিজয় সিং, জয়রাম রমেশ-সহ আরও অনেকেই আছেন যারা ভোটে দাঁড়াতে চাইছেন না বলে খবর। শুধু তাই নয়, রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরাও নিশ্চিত কেন্দ্রে দাঁড়াতে চাইছেন উত্তরপ্রদেশকে এড়িয়ে। এই যদি কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের মানসিকতা হয়, তাহলে বিজেপির মতো প্রবল শক্তিধর দলের সঙ্গে কীভাবে লড়াই করবে তারা? এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে।
রাহুল গান্ধী গত নির্বাচনে আমেথি কেন্দ্রে হেরে গিয়েছিলেন। তবে কেরলের ওয়েনাড় কেন্দ্রে জিতে সাংসদ পদ ধরে রাখতে পারেন। এবারেও তিনি সেখান থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কিন্তু তাতে বেজায় ক্ষোভ প্রকাশ করছে বামেরা। কারণ বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোটে অন্যতম শরিক হিসেবে রয়েছে বামেরা। ওয়েনাড় কেন্দ্রে রাহুলের বিপক্ষে প্রার্থী সিপিআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার স্ত্রী অ্যানি রাজা। তাই কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সিপিআই। তাদের কথায় রাহুল গান্ধীর মতো শীর্ষস্তরের নেতার উচিত বিজেপির শক্তিশালী নেতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা। কিন্তু রাহুল দ্বিতীয় কেন্দ্র হিসেবে শেষ পর্যন্ত আমেথিকে বেছে নেবেন কিনা তা নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা রয়েছে। যথারীতি বিষয়টি নিয়ে ভোটারদের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে।
এ যেন নির্বাচনের আগেই হেরে বসা। বিশেষ করে উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে কংগ্রেস আগে থেকেই যেন বিজেপির কাছে আত্মসমর্পণ করে বসে রয়েছে। উত্তর ভারতের রাজ্যগুলি থেকেই বিজেপি যে সবচেয়ে বেশি আসন পাবে, এটা সকলেই জানেন। তাই বিরোধীদেল উচিত ছিল সেখানে বিজেপি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রার্থী দাঁড় করানো। কিন্তু সেই জায়গায় বহু আসনে কংগ্রেস দুর্বল প্রার্থী দাঁড় করাচ্ছে। কারণ একটাই, তথাকথিত হেভিওয়েটরা দাঁড়াতে চাইছেন না। এমনিতেই সোনিয়া গান্ধী এবারের লোকসভা নির্বাচনে অসুস্থতার কারণে রায়বেরিলি কেন্দ্রে প্রার্থী না হয়ে রাজস্থান থেকে রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়ে গিয়েছেন। তাই রাহুল-প্রিয়াঙ্কা বা কংগ্রেসের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্ব যদি কঠিন আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করেন তাহলে প্রশ্ন তো উঠবেই। এই আবহের মধ্যে কংগ্রেসের পরবর্তী প্রার্থী তালিকায় কাদের নাম থাকবে তা নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে রাজনৈতিক মহলের।