kejriwal
নয়াদিল্লি: ভোটের আগে হাতে গরম ইস্যু পেয়ে গেল বিরোধীরা। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতার হওয়াটা কিছুটা হলেও শাপে বর হতে পারে বিরোধীদের। রাজ্যে রাজ্যে এখনও বিরোধীরা মসৃণ জোট গঠন করতে পারেনি। যেখানে নিশ্চিত ভাবে জোট হওয়া নিয়ে কোনও বাধা নেই সেখানেও আলাপ আলোচনা চলছে। যথারীতি তা নিয়ে তিক্ততা তৈরি হচ্ছে নিজেদের মধ্যে। এই আবহের মধ্যে কেজরিওয়াল গ্রেফতার হওয়ায় নিজেদের অজান্তেই বিরোধীরা এককাট্টা হয়ে গিয়েছে। তাই দেখা গিয়েছে গ্রেফতারির পরেই রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা, অখিলেশ যাদব, উদ্ধব ঠাকরে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ ব্রায়েনদের পাশাপাশি বাম নেতৃত্ব এই ইস্যুতে বিজেপির তীব্র সমালোচনা করেছেন। এই ইস্যুতে বিরোধীরা বিজেপির উপরে যে আরও চাপ বাড়াবে সেটা বোঝাই যাচ্ছে।
হেমন্ত সোরেন গ্রেফতার হওয়ার মাত্র কিছুক্ষণ আগে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। সেই অর্থে সাম্প্রতিককালে অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রথম ব্যক্তি যিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকাকালীন গ্রেফতার হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টির অভিঘাত প্রবল ভাবে পড়েছে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে। যদিও বিজেপির দাবি এই ঘটনায় তারা যুক্ত নয়। স্বশাসিত সংস্থা ইডি গ্রেফতার করেছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে, সেখানে বিজেপির হাত থাকতে পারে এমনটা ভেবে নেওয়ার কোনও কারণ নেই। তবে বিজেপি যতই এই দাবি করুক না কেন, তা মানতে পারছে না বিরোধীরা। বিরোধীদের স্পষ্ট দাবি, বিজেপির ইশারা ছাড়া এত বড় ঘটনা ঘটতে পারত না।
শুধুমাত্র দিল্লির মধ্যে এখন আর আটকে নেই আম আদমি পার্টি। পাঞ্জাবে তারা ক্ষমতায় এসেছে। কেজরিওয়ালের জন্মভূমি হরিয়ানায় চলতি বছরের শেষে বিধানসভা নির্বাচন হবে। লোকসভা নির্বাচনে হরিয়ানায় কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টির মধ্যে আসন সমঝোতা হয়েছে। গুজরাট, গোয়া, রাজস্থান, হিমাচল প্রদেশে ধীরে ধীরে শক্তি বাড়াচ্ছে আম আদমি পার্টি। তবে কি আগামী দিনের কথা ভেবেই কেজরিওয়ালকে ভয় পাচ্ছে বিজেপি? হিন্দি বলয়ে বর্তমানে বিজেপি কার্যত অপ্রতিরোধ্য অবস্থায় রয়েছে। সেই জায়গায় হিন্দি বলয়ের রাজ্যগুলিতে আগামী দিনে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রধান শক্তি হিসেবে আম আদমি পার্টি গণ্য হবে, এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কারণ উত্তর ভারতে কংগ্রেসের ক্রমেই শক্তিক্ষয় হচ্ছে। সেই জায়গায় আম আদমি পার্টি আগামী দিনে বিজেপির বড় চ্যালেঞ্জার হয়ে উঠতেই পারে। সব মিলিয়ে কেজরিওয়াল গ্রেফতার হওয়ার পর নানা চর্চা শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে। আর তাতে বিরোধীরা যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে উঠছে সেই ফ্যাক্টর একাধিক রাজ্যে বিজেপির কাছে বিপদ হয়ে উঠতেই পারে।