নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও ঠিক কোন কোন আশঙ্কা রয়েছে বিরোধীদের?

নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও ঠিক কোন কোন আশঙ্কা রয়েছে বিরোধীদের?

ভোট

central forces

কলকাতা: লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে মুড়ে ফেলা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত বুথ। নজিরবিহীন ভাবে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই বাংলায় আসতে শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। যা নিঃসন্দেহে স্বস্তি জুগিয়েছে বিরোধীদের। কিন্তু তা সত্ত্বেও নির্বাচনের দিনগুলিতে একটি বিশেষ কারণে চিন্তিত বিরোধীরা। বাংলায় ৯২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। কিন্তু সুষ্ঠুভাবে ভোট করানোর লক্ষ্যে বুথ দখল বন্ধ করার পাশাপাশি কমিশনকে অন্য একটি বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে হবে, যে দাবি বহুদিন ধরেই করছে বিরোধীরা।

ঘটনা হল বিরোধীদের অভিযোগ বহু জায়গায় বুথ পর্যন্ত আসতেই পারেন না তাদের দলের ভোটাররা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের শাসিয়ে আসে শাসক দলের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা, এমন অভিযোগ বহুদিন ধরেই বাংলায় রয়েছে। যদিও সমস্ত অভিযোগ প্রতিবারই অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তবু অভিযোগ যখন রয়েছে তখন কমিশনের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে ভোটারদের নির্বিঘ্নে বুথে নিয়ে আসা। গত কয়েকটি লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে কেউই বলতে পারবেন না যে একের পর এক বুথ দখল হয়ে গিয়েছে। কারণ প্রত্যেকটি বুথ কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় মোড়া ছিল। কিন্তু প্রশ্নটা হল ভোটাররা যদি বুথে আসতেই না পারেন তাহলে ভোটটা দেবেন কী করে?

বিরোধীদের অভিযোগ বহু জায়গায় শাসকদলের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা গ্রামে গ্রামে ঢুকে ভোটারদের ভয় দেখিয়ে, ভোটার কার্ড কেড়ে নিয়ে তাঁদের ঘর থেকেই বেরোতে দেয় না। যে অভিযোগ প্রবল ভাবে উঠেছে সন্দেশখালিতে। গত কয়েকটি নির্বাচনে সেখানকার বহু মানুষ ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ। তাই ভোটারদের নির্বিঘ্নে বুথে নিয়ে যাওয়াটাই যে কমিশনের কাছে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ সেটা স্পষ্ট।

এছাড়া শাসক বিরোধী নির্বিশেষে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল ও নির্দল প্রার্থীদের এজেন্টদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করাটাও কমিশনের কাজ। উল্লেখ্য বুথের ভিতর কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা প্রবেশ করতে পারেন না বিশেষ অনুমতি ছাড়া। মূলত বুথের বাইরে নিরাপত্তা সামলানোর দায়িত্বে থাকেন তাঁরা। তাই বুথের ভিতর সব কিছু ঠিকঠাক চলছে কিনা তাও দেখতে হবে কমিশনকে। অতীতে বহু জায়গায় গণ্ডগোলের পর শোনা যায় সেই বুথের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। অর্থাৎ শুধু বুথে নিরাপত্তা বাড়ালেই হবে না, গ্রামের ভিতরে ভিতরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের রুট মার্চ করিয়ে, এরিয়া ডমিনেশন করিয়ে, ভোটারদের মনে আস্থা জাগানোর চেষ্টা করতে হবে কমিশনকে। রাজ্য জুড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের যাতে নিখুঁতভাবে ব্যবহার করা যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে কমিশনকে।

বহু ক্ষেত্রে অভিযোগ ওঠে বাহিনী নাকি এক জায়গায় বসে আছে। তাতে ৯২০ কোম্পানি কেন, ১০ হাজার কোম্পানি বাহিনী আসলেও কাজের কাজ কিছু হবে না। সবমিলিয়ে এই সমস্ত বিষয় নিয়ে প্রতিবারই উদ্বেগ প্রকাশ করে বিরোধীরা। এগুলি বন্ধে কমিশন এবার কতটা কঠোর হতে পারে এখন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *